ঢাকা: আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খাইরুল হক বলেছেন, জনগণই এই দেশের প্রকৃত মালিক। আর রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে বাকি সবাই জনগণের সেবক। একথা চোখে আঙ্গুল দিয়ে সংবিধানের আর্টিকেল ৭ এ উল্লেখ আছে। তারপরও আমরা এখনো জনগণের সেবক হতে পারিনি। এখনো যেন সেই আগের অবস্থায়ই রয়েছে। আমাদের সবাইকে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সেবক হতে হবে। এসময় তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের কর্তকর্তাদের তীব্র সমালোচনা করেন। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত রচিত গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে মুক্তবুদ্ধি প্রকাশন থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে খুন-জখম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে খাইরুল হক বলেন, ইদানিং অনেকে খুন জখমের বিষয়ে অনেক প্রশ্ন করেন। এটি সারা বিশ্বেই হচ্ছে। সম্ভবত আমরা আমাদের মূল্যবোধকে ভুলে যাচ্ছি। আমাদের মূল্যবোধের দিকে তাকাতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার মানুষের জন্য একজন আইনজীবি রয়েছে। অথচ আমেরিকায় প্রতি ২০ হাজারে একজন, ভারতে ৮০ হাজারে একজন আইনজীবি রয়েছে। ভারত টার্গেট করেছে প্রতি ২০ হাজারে ১ জন আইনজীবি রাখার। অথচ আমাদের দেশে কোন টার্গেটই নেই। তিনি অধ্যাপক আবুল বারকাত রচিত গ্রন্থটির প্রশংসা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতীয় পরিচয় দেয়ার জন্য বড় অবদান রেখেছেন। ১৯৭৫ সালের ঘটনা না ঘটলে আমরা আরো অনেক এগিয়ে যেতাম। হয়ত মালয়েশিয়ার থেকেও এগিয়ে যেতাম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তাকে সম্মান করতে হবে। রাজনীতি করতে হলে তাকে রাখতে হবে। সম্প্রতি বিরিয়ানির প্যাকেটে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদেরকে খাই খাই স্বভাব ত্যাগ করতে হবে। শোক সভায় যারা বক্তব্য দিচ্ছেন তাদের ভাগ্যের দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, সিনিয়র আইনজীবি ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানম প্রমুখ।