ঢাকা: ফাঁসি, গুম, খুন, দেখামাত্রই গুলি ও হত্যা করে বাংলাদেশের জমিনে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রগামিতা ঠেকানো যাবেনা। যে মাটিতে শাহাদাতের রক্ত ঝড়েছে সেই প্রিয় জন্মভূমিতে ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত। ইসলামী আন্দোলনকে নেতৃত্ব শূণ্য করার জন্যই একের পর এক জামায়াত নেতৃবৃন্দকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। বিনাবিচারে হত্যা ও নিয়ন্ত্রিত বিচারিক হত্যা করে বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনকে নেতৃত্বশূণ্য করার চক্রান্ত সফল হবেনা। বিশ^ ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসে বিভিন্ন দেশে সাজানো মামলায় বরেণ্য ইসলামী মণিষাদের হত্যা করা হয়েছে কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের সাহসী সংগ্রামকে কেউ ঠেকাতে পারেনি। শীর্ষনেতৃত্বকে হত্যা করেও বাংলার জনগনের আদর্শিক সংগ্রামকে দুর্বল করা যাবেনা। বরং শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ইসলাম প্রিয় জনতা যখন জীবন বাজি রেখে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেই জমিনে ইসলামের বিজয় অনিবার্য। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইসলামী আন্দোলনের পথ কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ নয়। রাজনৈতিক, সামাজিক আর কোন প্রচলিত বিচারে এই আন্দোলনের সাফল্য নির্ণয় করা যায়না। আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে তাকওয়ার ভিত্তিতে যে কোন জুলুমের বিরুদ্ধে দ্বিধাহীন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার মধ্যেই এর সুনিশ্চিত সাফল্য। যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষনেতাদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার মহত্তম সংগ্রাম থেকে আল্লাহর বাছাইকৃত প্রিয় বান্দাদের নিবৃত্ত রাখা যায়নি। দখলদার শাসকগোষ্ঠী তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতেই যুগে যুগে হাক্কানী ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় হত্যা-জুলুম চাপিয়ে দয়িছে। কিন্তু যখনই কোন জনপদের রাষ্ট্রশক্তি যেখানকার ইসলাম, ইসলামী সংগঠন, ইসলামী নেতৃত্ব ও ওলামায়ে কেরামকে তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে তখন সেই জনপদ ইসলামের দুর্জয় ঘাটিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশে^র একমাত্র মুসলিম রাষ্ট্র যা ভৌগলিকভাবে মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। কিন্তু এই জমিনের মানুষের বোধ-বিশ^াস ও জাতীয় সিদ্ধান্তের কারণেই এই জমিন মুসলিম অধ্যুষিত জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচয় নিয়েই বিশ^মানচিত্রে স্থান দখল করে আছে। এদেশবাসীর ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত তারা ইসলামকে নিয়েই বাঁচবে, ইসলামের জন্যই মরবে। তাই কোন শাসকচক্রের রাজনৈতিক উন্মত্ত ক্রোধের কারনে এই দেশের মানুষ ইসলামী আন্দোলন থেকে সরে আসবেনা। সাজানো মামলায় ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষনেতাদের হত্যা করা হলে ইতিহাসই এসব হত্যার বিষয়ে পূণর্বিচার করবে। তখন এধরনের প্রহসনের বিচারের কুশীলবরা তাদরে পরিণতি এড়াতে পারবেনা। যে দেশের মানুষ জানে দখলদার শাসকগোষ্ঠীর ঘাতক বাহিনী প্রতিবাদী জনতাকে দেখমাত্রই গুলি করবে এধরনের সুনিশ্চিত মৃত্যুর মুখেও যারা অন্যায় ও অসত্যের প্রতিবাদে রাজপথে নামে সেই জাতির জাতীয় মুক্তির সংগ্রামকে কেউ পরাস্থ করতে পারবেনা।
জামায়াত নেতা বলেন, বিনাভোটের সরকার তার অবৈধ দখলদারিত্বের জন্য শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীকেই হুমকি মনে করে তাই এইদলটির শীর্ষনেতৃত্বকে একের পর এক হত্যা করে চলেছে। কিন্তু বরেণ্য ইসলামী নেতৃত্বকে নির্মূলে চক্রান্তের কারণেই দেশের মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে এদেশে ইনসাফ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার আপোষহীন পাহারাদার হিসেবেই মনে করে।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, জননেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মুক্তির দাবীতে আইন শৃংখলা বাহনিীর দেখামাত্র গুলির নির্দেশ উপেক্ষা করে মীরপুর, পল্টন, মগবাজার, দৈনিকবাংলা, ফকিরাপুল মোহাম্মদপুর,জুরাইন, যাত্রাবাড়িসহ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জনতার স্বতস্ফূর্ত এসব মিছিলে পুলিশ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মহানগরী আমীর বলেন, হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্থ করা যাবে না।
সাজানো মামলায় হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গল ও বুধবার সর্বাতœক হরতাল সফল করতে নগরীর কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল, সাংবাদিক, ও ব্যাংক-বীমার কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-ছাত্র, চাকুরীজীবি, সাংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবীসহ সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষরে প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। বিজ্ঞপ্তি