ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ঈদের পর সিলেট থেকে আদালতের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন শুরু হবে। সিলেটে যদি ত্রুটিহীনভাবে করা যায় তবে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহসহ বড় বড় কয়েকটি জেলায় প্রকল্পটি চালু করা হবে। প্রকল্পটি চালু হলে বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি ভূলভ্রান্তি তাৎক্ষনিক সংশোধন করা যাবে। ময়মনসিংহে আদালত পরিদর্শনে এসে রোববার দুপুরে আইনজীবীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একথা বলেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনুল হক ভবন মিলনায়তনে জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নুরুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাডেভোকেট এম জুবেদ আলী, অ্যাডেভোকেট এ এফ এম নজমুল হুদা, অ্যাডেভোকেট আনিসুর রহমান খান, অ্যাডেভোকেট মো. ওয়াজেদুল ইসলাম, অ্যাডেভোকেট আনোয়ার হোসেন খান। আইনজীবি নেতৃবৃন্দ বিচারক স্বল্পতায় মামলাজট বৃদ্ধি, আর্থিক সঙ্কটের ফলে আইজীবি ভবন নির্মাণ বাধাগ্রস্ত হওয়া, ল্যান্ড সার্ভে ট্র্যাইবুনাল মামলা নিস্পত্তিতে অধিক সময়ক্ষেপনসহ বিরাজমান সমস্যা দুরীকরণের দাবি জানান। প্রধান বিচারপতি আইনজীবিদের কথা শুনেন এবং তার উদ্যেগের কথা জানান। এর আগে প্রধান বিচারপতি ময়মনসিংহের বিভিন্ন আদালত পরিদর্শন এবং বিচারিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম সাথে ছিলেন। পরে দুপুরে তিনি ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবি সমিতির আয়োজনে আইনজীবিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্য জেলার তুলনায় ময়মনসিংহে আদালতের সমস্যা একবারে কম। এগুলো যত দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় সে নির্দেশনা আমি দিয়ে যাব, যাতে জনগণের কষ্ট না হয়। তিনি বলেন, ময়মনসিংহের মামলাজট কমাতে বিলুপ্ত দু’টি আদালতের মধ্যে একটি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত বর্ধিত করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ময়মনসিংহে ৪২ হাজার ও কিশোরগঞ্জে ৩০ হাজার সেটেলমেন্ট সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এসব মামলা নিষ্পত্তি করতে সিনিয়র সহকারি বিচারকের পরিবর্তে সহকারি বিচারক নিয়োগ করার জন্য আইন সংশোধন করার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি ময়মনসিংহে ২০০৫ সালের আগে দায়ের করা মামলাগুলো গুরুত্ব সহকারে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিচারক ও আইনজীবিদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, অর্পিত সম্পত্তির বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ রয়েছে। ‘বি’ তালিকায় বাদ পড়া একটি জাজমেন্ট ঈদের পর পরই সংশোধন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শুত্রু সম্পত্তি বিষয়ে আইন জটিলতার কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ভূমি সহকারি লিখে দিলেই শত্রু সম্পত্তি হবে না। শত্রু সম্পত্তি নিয়ে হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানরাই বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এটা নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। এ প্রসঙ্গে তিনি নভেম্বরে একটা আপিল রয়েছে বলেও জানান।