ঢাকা: জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে। সোমবার আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয়। এর ফলে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগ এর আগে যে রায় দিয়েছিল তা বহাল রইল।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার সকালে রিভিউ আবেদন খারিজ করে রায় দেন।
রিভিউ আবেদনের খারিজের মধ্য দিয়ে এ মামলার সব বিচার কার্যক্রম শেষ হয়ে গেল। আসামির জন্য এখন সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের একটি সুযোগ রয়েছে। তিনি যদি এ আবেদন না করেন বা আবেদন করলেও রাষ্ট্রপতি যদি তা নামঞ্জুর করেন তাহলে ফাঁসি কার্যকর করার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেছেন, কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষার আবেদনের জন্য সময় পাবেন। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে তাকে আবেদন করতে হবে। তিনি আবেদন করলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর করা যাবে না। তবে আবেদন না করলে বা আবেদন নাকচ করা হলে সেক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল আইনের ধারা মোতাবেক সরকার ফাঁসি কার্যকর করার সময় নির্ধারণ করবে। তিনি বলেন, ফাঁসি কার্যকরের জন্য সাত দিনের আগে নয় এবং ২১ দিনের পরে নয় জেলকোডের এ নিয়ম তার জন্য প্রযোজ্য হবে না। সরকার যখন চাইবে তখন তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফাঁসির দিনক্ষণ ঠিক করে তা জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেবে এবং সে অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রাণভিক্ষার আবেদন বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদন খারিজের বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠাবে। কারা কর্তৃপক্ষ রিভিউ আবেদনের রায় আসামিকে পড়ে শোনানোর পর তার কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন বিষয়ে জানতে চাইবে। সেটা বিবেচনার জন্য তিনি কিছু সময় পেতে পারেন। তবে খুব বেশি দেরি করার সুযোগ নেই।
মুহম্মদ কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। গত বছর ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ডের একটি অভিযোগ বহাল রাখেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। মৃত্যুদণ্ডের আরেকটি সাজা বাতিল করে যাবজ্জীবন করেন।
সোমবার রিভিউ আবেদন খারিজের মাধ্যমে আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ৩ নভেম্বর যে রায় দিয়েছিলেন তা বহাল রইল। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের অপর তিনটি অভিযোগের বিষয়ে আপিল বিভাগ আগে যে রায় দেন তা-ও বহাল রইল সোমবারের রায়ে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা ট্রাইব্যুনাল থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।