ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়া যে আন্দোলন করছেন এটা কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন হতে পারে না। তিনি আইএস’র মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছেন। বিশ্বের কোনো দেশ সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনা করে না। ইরাক ও সিরিয়ার আইএস (ইসলামিক স্টেট) দুজন জাপানি সাংবাদিককে অপহরণ করেছিল। জাপান কি আইএসের সাথে আলোচনা করেছে। তারা আইএসের সাথে আলোচনায় রাজি ছিল না। সারাবিশ্বে একমত সন্ত্রাসীদের সাথ কোনো আলোচনা হবে না। আমরাও সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনা করতে পারি না। এই সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো আলোচনা হতে পারে না।
শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে দলের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ‘আপনি বলছেন, সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো রাষ্ট্র আলোচনা করে না, কিন্তু প্রতিনিয়তই বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে আলোচনা করছেন, এ বিষয়টি কীভাবে নিচ্ছেন?’ সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, যারা রাষ্ট্রদূত আছেন, খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন। তারা কি পরিমাণ আলোচনা করেন বা হয় এটা আমরা জানি। আপনারা জানেন না। তাদের সাথে এমন কিছু আলোচনা হয় না, যে নির্বাচনের তারিখ বা সময় দেয়ার বিষয়। তারা খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। তারা বলেছেন, সহিংসতা বন্ধ করতে। তিনি আরো বলেন, এখানে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি আসে। যারা নিজ দেশে কোনো মূল্য পায় না। আর আপনারা ৫০টি টিভি চ্যানেল গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। মনে হয়, তারা আপনাদের ত্রাণকর্তা।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, খালেদা জিয়া আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, কিসের আলোচনা। যদি সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনা করা হয় তাহলে সন্ত্রাসীরা প্রশয় পায়, আশ্রয় দেয়া হয়। হত্যাকারীদের সাথে বিশ্বের কোনো দেশ আলোচনা করে না। সন্ত্রাসীদের দমন করার একমাত্র পথ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা।
তিনি বলেন, আলোচনার কোনো সুযোগ নাই। সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো আলোচনা হতে পারে না। খালেদা জিয়া যদি তাদের সন্ত্রাসীদের পরিহার করেন, মানুষ মারা, পুলিশ মারা, শিশু মারা বন্ধ করেন তাতে দেশে শান্তি ফিরে আসবে, পরিবেশ তৈরি হবে। তখন আলোচনার কথা আসতে পারে। হয়তো আলোচনা করা সম্ভব হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে আলোচনা নয়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, নির্বাচনতো হবে। নির্বাচনের ট্রেন কোনোদিন থামবে না। আগামীতেও সঠিক সময়ে একইভাবে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের জন্য আপনি প্রস্তুতি নিতে পারেন। সেই নির্বাচনে যদি খালেদা জিয়া নাও আসেন তাহলে তার দায় দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। এদেশের জনগণ তার দায়ভার নেবে না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করবো, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন, অবরোধ প্রত্যাহার করুন। জ্বালাও-পোড়াও হত্যা বন্ধ করুন। এভাবে ক্ষমতায় যেতে চান! যদি সারাদেশের মানুষকে জিম্মি করে আপনি আপনার দাবি আদায় করতে চান তাহলে কোনো দিন হবে না।
‘সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হলে বিএনপি সাথে আপনারা সংলাপে বসবেন কি-না’ জানতে চাইলে সৈয়দ আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম, সুজিত রায় নন্দী, উপ-প্রচার সম্পাদক অসিম কুমার উকিল প্রমুখ।