আবদাল হোসেন লন্ডন থেকে: ব্রিটেনে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এমন ইমিগ্রেন্টদের চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইমিগ্রেশন মিনিস্টার জেমস ব্রোকেনশায়ার। তিনি বলেন, অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের চাকরিতাদা প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুঁজে বের করতে অভিাযান আরো জোরদার করা হবে। রেস্টুরেন্ট খাতের পাশাপাশি এবার ক্লিনিং কোম্পানি ও কেয়ার হোম-এর মত প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করে অভিযান চালানো হবে। গত ১০ আগস্ট সোমবার ব্রোকেনশায়ার অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের খুঁজে বের করতে সরকারের নতুন এই উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে যে, অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নামমাত্র বেতন দিয়ে তাদের কাজ করান। এরফলে ব্রিটিশ নাগরিকরা চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন কিংবা ন্যায্য হারের চাইতে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হন। এসব প্রতিষ্ঠানে হেলথ এন্ড সেইফটির মত জরুরি বিষয়গুলোও মানা হয় না। অবৈধ ইমিগ্রন্টদের চাকুরিদাতা ব্যবসায়ীরা ভিএটি বা আয়-ব্যায়ের হিসাবও গোপন করেন। যে কারণে সরকার অসাধু ব্যবাসায়ীদের সম্ভাব্য সকল দিক থেকে পাকড়াও করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযানের ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায়কারী কর্তৃপক্ষ এইচএমআরসি, হেলথ এন্ড সেইফটি এক্সেকিউটিভ এবং কর্মী অত্যাচার রোধে কাজ করে গ্যাঙ্গমাস্টার লাইসেন্সিং অথোরিটিকে যুক্ত করা হবে। মন্ত্রী বলেন, অবৈধদের কর্মে নিয়োগ করা ঠেকাতে সরকারের সকল ‘মেশিনারির’ পূর্ণ ব্যবহার করা হবে। গত মাসখানেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটেন-ফ্রান্স সীমান্ত ক্যালেতে অভিবাসী নিয়ে বড় রকমের সংকট মোকাবেলা করছে ব্রিটেনে। সেখানে প্রায় ৫ হাজারের বেশি ইমিগ্রেন্ট চ্যানেল টানেল পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ব্রিটেন প্রবেশের চেষ্টা করছে। আফ্রিকা মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ পথে ইউরোপে আসা এসব ইমিগ্রেন্ট জোরপূর্বক লরি বা অন্যকোনো গাড়িতে উঠে ব্রিটেন প্রবেশের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন। সংকট মোকাবেলায় ব্রিটেনে এবং ফ্রান্স সরকার রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। ৪শ অতিরিক্তি পুলিশ এবং প্রায় ৭ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যায়ে ব্রিটেন ক্যালে সীমান্তে এক মাইলের বেশি অংশ জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করলেও অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না।
ব্রিটিশ সরকারে হিসাব মতে, গত মার্চ মাসের পর থেকে ক্যালে সীমান্ত দিয়ে ৬২৯ জন অভিভাবকহীন শিশু ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে। আর প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তি প্রবেশের সংখ্যা ২২০ জন। সীমান্ত নিকটবর্তী কেন্ট কাউন্সিল অবৈধভাবে প্রবেশ করা ইমিগ্রেন্টদর নিয়ে বিপাকে রয়েছে। কাউন্সিল জানিয়েছে, অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের নিয়ে সৃস্ট সংকট মোকাবেলায় চলতি বছর তাদের বাড়তি ৫৫ লাখ পাউন্ডের প্রয়োজন হবে।
ক্যালেতে সৃস্ট সংকটের জের ধরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রিটেনে ইমিগ্রেশন বিতর্ক উত্তপ্ত হয়েছে উঠে। ইমিগ্রেশনের প্রতি বিরুপ কনজারভেটিভ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন,‘পতঙ্গের ঝাঁকের মত ওরা ইউরোপের দিকে ধেয়ে আসছে’। হোম সেক্রেটারি থেরেসা মে বলেন, ‘ব্রিটেনের মাটি অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের জন্য স্বর্ণে মোড়া নয়’। আর সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট রোববার ফরেন সেক্রেটারি ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, ‘আফ্রিকান ইমিগ্রেন্টদের কারণে ইউরোপের জীবনমান হুমকির মুখে পড়েছে’।
রক্ষণশীল সরকারের ইমিগ্রেশন নিয়ে বিরূপভাব শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; সম্প্রতি স্টুডেন্ট ভিসায় নানা কড়াকড়ি আরোপসহ অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের বাড়িভাড়ার ক্ষেত্রে নানা কঠোর শর্ত আরোপ করেছে সরকার। ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া মাত্রই ইমিগ্রেন্টদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদে বাড়িরমালিকদের প্রতি বাধ্যবাধকতা জারি করা হয়েছে। আবার এসাইলাম আবেদন প্রত্যাখ্যাত (রিফিউজ) হওয়া মাত্র তাদের প্রাপ্য বেনিফিট সুবিধা বাতিলের নিয়ম চালু করা হয়েছে। এই বেনিফিট সুবিধা বাতিলের ফলে এসাইলাম আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া পরিবারগুলো দুর্বিসহ যাতনার মধ্যে পড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
ডেভিড ক্যামেরন ২০১৫ সালের মধ্যে ব্রিটেনে নেট ইমিগ্রেশন ( বছরে যে পরিমান মানুষ ব্রিটেনে প্রবেশ করে এবং যে পরিমান মানুষ ব্রিটেন ছেড়ে যায় তার পার্থক্য) বছরে এক লাখের নীচে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইউরোপিয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা ইমিগ্রেন্টের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনলেও ইইউ থেকে আসা ইমিগ্রেন্টদের ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নিয়ে না পারায় তিনি সেই লক্ষ্য পূরণে চরমাভাবে ব্যর্থ হন। গত মে মাসে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরে কনজারভেটিভ সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণে এবার মরিয়া হয়ে লেগেছে। গত ১০ আগস্ট সোমবার গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ইমিগ্রেন্ট বিতাড়নে সরকার আইনের তোয়াক্কা করছে না। ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষ করে সাধারণ ইমিগ্রেন্টদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এসব ইমিগ্রেন্টকে নিজ দেশে পৌছে দেয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার সাধারণত চার্টার ফ্লাইট ভাড়া করে।
গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চার্টার ফ্লাইটের কোনো সিট যাতে খালি না যায় সেজন্য হোম অফিস সংশ্লিষ্ট দেশের ইমিগ্রেন্টদের টার্গেট করে জোরপূর্বক ফ্লাইটে তুলে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে ডিটেনশন সেন্টারে আটক ইমিগ্রেন্টদের টার্গেট করা হয়। সিটপূর্ণ না হলে আটক নেই এমন ইমিগ্রেন্টকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, জোরপূর্বক বিতাড়নের শিকার হওয়া এসব ইমিগ্রেন্টদের আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ দেয়া হয় না। কিংবা এদের কারো কারো জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে।
সরকার অবৈধ ইমিগ্রেন্ট বিতাড়নে অভিযান জোরদারসহ আইনের নানা কড়াকড়ি আরোপ করলেও ঠিক কী পরিমাণ পরিমাণ ইমিগ্রেন্ট অবৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাস করছে তার সঠিক কোনো হিসাব পাওয়া যায়। ২০০৯ সালে লন্ডন মেয়র বরিস জনসনের জন্য তৈরি করা লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের এক প্রতিবেদনে অবৈধ ইমিগ্রেন্টের সংখ্যা ৬ লাখ ১৮ হাজার বলে অনুমান করা হয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন বিরোধী ক্যাম্পেইন গ্রুফ ‘ইমিগ্রেশন ওয়াচ’ এর অনুমান এই সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। আবার ২০১১ সালে দি অর্গেনাইজেশন ফল ইকোনোমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর হিসাবে বলা হয়েছে, ব্রিটেনে মোট কমংস্থানের অন্তত ১ শতাংশ অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের দখলে। সে হিসাবে ব্রিটেনে কর্মরত অবৈধ ইমিগ্রেন্টের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ।
ক্যামেরন সরকার ইইউর বাইরের দেশ থেকে আসা ইমিগ্রেন্টদের জন্য আইন কড়াকড়ি করার ফলে এসব দেশে ভিসা প্রদানের হারও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এর বিপরীতে বেড়েছে এসাইলাম আবেদনের হার। গত মার্চ পর্যন্ত এক বছর সময়ে ব্রিটেনে এসাইলাম আবেদন জমা পড়েছে ২৫ হাজার ২০টি, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। এই এসাইলাম আবেদনকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইরিথ্রিয়ানরা (৩,৫৫২), দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তান (২,৪২১) এবং তৃতীয় সিরিয়া (২,২২২)। ব্রিটেনে এসাইলাম আবেদনে বাংলাদেশিদের অবস্থান ১০ নম্বরে। গত বছর ব্রিটেনে এসাইলাম আবেদন করেছেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় সাতশ। এছাড়া এসাইলাম আবেদনের ক্ষেত্রে শীর্ষে দশে থাকা অন্যান্য দেশগুলো হলো ইরান (৪র্থ), সুদান (৫ম), আলবেনিয়া, (৬ষ্ঠ), আফগানিস্তান (৭ম), শ্রীলঙ্কা (৮ম) এবং নাইজেরিয়া (৯ম)।
তবে ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো মধ্যে এসাইলাম আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের অবস্থান পঞ্চম। গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি এসাইলাম আবেদন জমা পড়েছে জার্মানিতে (১,৬৬৮০০)। এরপর আছে সুইডেন (৮১,৩০০), ফ্রান্স (৬৩,১০০) এবং ইতালি (৫৬,৩০০)। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব ইমগ্রেন্ট অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করছেন এবং এরপর তারা এসাইলাম আবেদন করছেন।
সমগ্র ইউরোপে যখন এসাইলাম আবেদনের এই হিড়িক তখন প্রশ্ন উঠেছে- কেন এসব ইমিগ্রেন্ট নিজ দেশ ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমাচ্ছেন? ইউরোপের রাজনৈতিক ও সরকারগুলোর দাবি অর্থনৈতিক কারণে এরা ইউরোপে আসছে। কিন্তু বিভন্ন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক এবং আফগানিস্তানের মত দেশগুলোতে পশ্চিমা সরকারগুলোর অনৈতিক হস্তক্ষেপ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃস্টি করেছে এবং লাখ লাখ শরনার্থীর জন্ম দিয়েছে। যে কারণে ওইসব দেশের মানুষ প্রাণে বাঁচতে অন্যত্র পাড়ি জমাচ্ছেন।
পূর্ব লন্ডনের স্যান্ডউইচ কারখানায় অভিযান : ৩২ জন আটক
পত্রিকা রিপোর্ট
লন্ডন, ১০ আগস্ট : পূর্ব লন্ডনের ব্রমলি-বাই-বো- এলাকার একটি স্যান্ডউইচ কারাখায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে ৩২ জনকে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। আটককৃতদের সবাই আফ্রিকান এবং ইস্টার্ণ ইউরোপিয়ান দেশের নাগরিক বলে ডেইলি মেইল- এর খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
আটককৃতরা ভুয়া কাগজ-পত্র নিয়ে ব্রিটেনে অবস্থান করছিলেন। বিশেষ করে তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করছিলেন। এসব কর্মীর নিয়োগে যথযথ যথাযথ প্রক্রিয়া মানার প্রমাণ না পাওয়া গেলে গ্রীনকো প্রতি কর্মীর জন্য প্রায় ২০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানার মুখোমুখি হবে সে হিসাবে ৩২ জনের জন্য মোট জরিমানার পরিমান হবে প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড।
গত ৭ আগস্ট শুক্রবার মধ্যরাতে ‘গ্রীনকোর’ নামে একটি স্যান্ডউইচ প্রস্তুতকারক কোম্পানির কারখানায় অভিযান চালানো হয়। গ্রীনকোর ব্রিটেনের মধ্যে বৃহত্তম একটি স্যান্ডউইচ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ওয়েইটরোজ, স্যাইন্সবারিস, মরিসন এবং আসডার জন্য স্যান্ডউইচ তৈরি করে এই কোম্পানি। এই কোম্পানির বার্ষিক আয় প্রায় ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ড।
ডেইলি মেইলের সংবাদে বলা হয়, ‘গ্রীনকোর’ কারখানায় অবৈধ ইমিগ্রেন্ট কাজ করছে-এই সংবাদটি গোপনে হোম অফিসকে জানিয়ে দিয়েছিলো কেউ। যার ভিত্তিতে হোম অফিস নজরদারি করে এবং গত শুক্রবার মধ্যরাতে রেইড দেয়। অতর্কিত এই অভিযানে কারখানার কর্মীরা নিজেদের সাথে পরিচয়পত্রসহ কাগজ- পত্র লুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কেউ কেউ মোবাইলে অন্যান্য সহকর্মীদের ফোন করে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে কাজে না আসতে সতর্ক করে দেয়। লুকাতে চাওয়া কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই করে হোম অফিস দেখে যে, জাল করে এসব ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ এসময় কয়েক ডজন তালা বল্ট কাটার দিয়ে কেটে কর্মীদের ব্যক্তিগত লকারে তল্লাশি চালায়।
আটককৃতদের মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গের দায়ে সাথে সাথেই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। একজনকে আরো অনুসন্ধান করা হবে সাপেক্ষে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বাকী ২২জনকে আটক রেখে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের বিষয়ে আরো তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। গ্রীনকোর একজন কর্মী ডেইলি মেইলকে বলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি শিফট শুরু করতে কারখানায় গিয়ে দেখেন আশপাশে অনেকগুলো পুলিশের গাড়ি রাখা। ইমিগ্রেশন পুলিশের লোকজনও এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করছে। তিনি বলেন, ‘কী হচ্ছিলো তা কেউ আমাকে বলেনি। আমাকে বলা হয় উপরে যাওয়ার জন্য। উপরে গিয়ে দেখি একটি রুমে প্রায় একশর মত কর্মীকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এসব কর্মীদের কেউ কেউ ফোন করে অন্য সহকর্মীকে কাজে আসতে নিষেধ করছিলেন। যদি না আবার তারাও ধরা পড়ে’।
এই কর্মী আরো জানায়, ওই দিনের রেইডের পর থেকে অন্তত অর্ধেক কর্মী কাজে ফিরছে না। তাদের ধারণা, কাজে আসলে তারাও ইমিগ্রেশন রেইডের শিকার হবেন। তিনি জানান, সাধারণত সাতটি লাইনে স্যান্ডউইচ তৈরি কাজ চলে। কিন্তু শুক্রবারের ওই ঘটনার পর চারটি বেশি লাইন চালু করা যায়নি।
গ্রীনকোর একজন মূখপাত্র বলেন, তারা যথাযথভাবে কাগজ-পত্র যাচাই করে লোক নিয়োগ দেন। কর্মীদের ইমিগ্রেশন নিয়ে সন্দেহ জাগলে তারা নিজেরাই এর আগে কয়েকবার হোম অফিসকে তথ্য দিয়েছেন। হোম অফিসের নিয়ম মেনেই তারা সবসময় কর্মী নিয়োগ দিয়ে আসছেন। ভবিষ্যতেও তারা এসব নিয়ম আরো ভালোভাবে মেনে চলবেন।