ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আচরণ পরিবর্তন করতে হবে: ওবায়দুল কাদের

0
513

ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে। ২৮তম এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে ছাত্রলীগের প্রশংসা করে তাঁদের উৎসাহ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ চেঞ্জমেকার হবে বলে উল্লেখ করেছেন। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে ছাত্রলীগের সঙ্গে তুলনীয় কোনো সংগঠন নেই বললেও চলে। সম্মেলনে আরও উপস্থিত রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।

সম্মেলন পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের উদ্দেশে বলেন, ”চেঞ্জমেকার হবেন কারা? চেঞ্জমেকার হবে ছাত্রলীগ।” তিনি বলেন, ”দেশকে বদলাতে হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের উপযোগী হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।”
মন্ত্রী বলেন, ”ছাত্রলীগের নেতাদের আমি বলব শুধু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ুন। তাহলে রাজনীতি কিংবা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে শিখতে হবে না। মুজিব পরিবারকে জানুন। তাহলে সবকিছু শিখতে পারবেন।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ”পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো ছাত্রসংগঠন আছে যা ছাত্রলীগের সঙ্গে তুলনীয়? এমনকি নেই বললেও চলে।” তিনি বলেন, ”আমি আশা করি, ছাত্রলীগ আরও এগিয়ে যাবে।”
আশরাফ বলেন, ”আমাদের এখানে ছাত্রদের রাজনীতির প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন থাকবে।” আগামী দিনে নির্বাচনে হোক বা আন্দোলনে হোক ছাত্রলীগ আগের মতোই ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।

সকাল ১১টার দিকে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান। সম্মেলনে ইতিমধ্যে শোকপ্রস্তাব ও সাংগঠনিক প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এসবের পাশাপাশি আজ গণসংগীত ও বক্তৃতা পর্ব চলবে। আর কাউন্সিল অধিবেশন হবে কাল রবিবার। সেখানেই নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। কোন পদ্ধতিতে সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব আসবেন, তা গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত নির্ধারিত হয়নি। সংগঠনের নেতাদের কেউ বলছেন, কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নতুন কমিটি হবে। আবার কেউ বলছেন, সমঝোতার ভিত্তিতে পরবর্তী কমিটি মনোনীত হতে পারে।

ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির পাঁচজন এবং এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল আওয়ামী লীগের দুজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রলীগের নতুন কমিটি কীভাবে হবে, নির্বাচিত না মনোনীত- এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা অনেকটাই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর।

ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ”আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। রবিবার সকালে প্রার্থীদের নিয়ে বসব। সেখানে যদি সমঝোতা হয়, তাহলে নির্বাচন পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না। আর যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে নির্বাচন হবে। তবে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তৃতার পরই কোন পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচিত হবে, তা চূড়ান্ত হবে।”
নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের (জয়) ছাত্রলীগ নিয়ে আগ্রহ আছে। কমিটি গঠনের বিষয়ে তাঁরও দিকনির্দেশনা থাকতে পারে।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য মোট ২৪২ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে ৩৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১৪ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২০ জন রয়েছেন।
২০১১ সালের ১০ ও ১১ জুলাই ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল।