চট্টগ্রাম: ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহ জালাল হলে তল্লাশি চালিয়ে জামায়াত ইসলামীর দার্শনিক গুরু মাওলানা আবুল আলা মওদুদীর লেখা কোরআনের তাফসির গ্রন্থ তাফহীমুল কোরআনসহ বেশ কিছু বই ও লিফলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় সেখান থেকে ২টি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি, ২০টি রামদা এবং অন্তত ২০টি লোহার রড এবং চাপাতিও উদ্ধার করা হয়।
রোববার দুপুরে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তাপস পাল নামে এককর্মী নিহতের পর বিকেলে পুলিশ এ অভিযান চালায়। এসময় রুবেল দে নামে ভিএক্স গ্রুপের এক কর্মীকে আটক করা হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে আরো ২৫ জনকে আটক করা হয়েছিল।
চট্টগ্রামের জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. শহীদুল্লাহ বাংলামেইলক বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের পর ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত শাহজালাল হলের বিভিন্ন কক্ষের তালা ভেঙে তল্লাশি চালানো হয়। এসময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর লেখা বেশ কিছু বই ধর্মীয় লিফলেট উদ্ধার করা হয়।’
এর আগে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির বগিভিত্তিক দুই গ্রুপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে তাপস পাল নামে নিজ দলের এককর্মীকে গুলি করে মেরেছে ছাত্রলীগের অপর গ্রুপ। রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চবির শাহজালাল হলের সামনে বগিভিত্তিক গ্রুপ ‘ভিএক্স’ ও ‘সিএসপি’ গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সুনমাগঞ্জের জামালপুর উপজেলার বিঞ্চুপুর গ্রামে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি অমিত কুমার বসু। যিনি বগি ভিত্তিক সংগঠন ‘সিএসপি’ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। আবার এরা দুই জনেই নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর আনুসারী।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে নিহত তাপস সরকারের লাশ নেত্রকোনার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশ গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী। এরপর তিনিসহ কয়েকজন সহপাঠী তাপসের লাশ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নেত্রকোনার উদ্দেশে রওনা দেন। যদিও তার বাড়ি সুনামগঞ্জ হলেও বড় ভাইয়ের চাকরির সূত্রে তারা এখন পরিবার নিয়ে নেত্রকোনায় থাকেন।