
ঢাকা: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহানের মামলার রায় আগামীকাল বুধবার ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রায়ের এই দিন ধার্য করে।
এর আগে একই ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ৪ ডিসেম্বর মাওলানা সুবহানের মামলার রায় যে কোনো দিন ঘোষণা করা হবে মর্মে অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করেছে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে প্রসিকিউশন।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের দাবি, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের অভিযোগসমূহ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একটি অভিযোগও তারা প্রমাণ করতে পারেনি। তিনি স্বসম্মানে খালাস পাবেন বলে আশা করেন তারা।
গত বছরের ১৭ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কার্যদিবসে সুবহানের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।
এর আগে গত ৫ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ও বৃহস্পতিবার আট কার্যদিবসে সুবহানের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।
গত ৭ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুবহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন দুই তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও মো. নূর হোসাইনসহ রাষ্ট্রপক্ষের ৩১ জন। অন্যদিকে সুবহানের পক্ষে তিনজন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করে দিলেও কোনো সাফাই সাক্ষী হাজির করেনি আসামিপক্ষ।
গত ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-১ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করে।
২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রসহ ৮ ধরনের ৯টি মানবতাবিরোধী অপরাধে সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে একই বছরের ২৩ অক্টোবর ও ২৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামিপক্ষে শুনানি করেন সুবহানের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান।
অন্যদিকে, ৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।
২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সুবহানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ১৫ সেপ্টেম্বর সুবহানের বিরুদ্ধে ৮৬ পৃষ্ঠার ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় প্রসিকিউশন।
২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে মাওলানা সুবহানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই রাতেই তাকে পাবনা কারাগারে নেওয়া হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয় মাওলানা সুবহানকে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশনের আবেদন আমলে নিয়ে সুবহানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।