ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুব রহমান হত্যাকাণ্ডে জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু ও তাদের গণবাহিনীর ভূমিকা জাতির সামনে পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জাসদের ভূমিকা ছিল গণতন্ত্রবিরোধী। এ জন্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে গণতন্ত্র নিয়ে কোনো উপদেশ না দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী সর্বশেষ গত রোববার বলেছিলেন, ‘আগুন সন্ত্রাসী-নাশকতাকারীদের নিয়ে পেট্রোলবোমা ও গ্রেনেড ছুড়তে ছুড়তে বেগম জিয়া নিজেই গণতন্ত্রের চৌকাঠের ওপারে চলে গেছেন।’
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এখন ইনু গণতন্ত্রের ছবক দেন। এটা জাতির জন্য পরিহাস। ইনু সাহেবকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তিনি যেন মেহেরবানী করে জাতিকে গণতন্ত্রের ছবক না দেন। কারণ তারা সবসময় গণতন্ত্রের শত্রু ছিলেন, গণতন্ত্রের দুশমন ছিলেন।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রীসভায় বেশ কিছু ‘পরগাছা’ মন্ত্রী নিজেদের মন্ত্রিত্ব বাঁচাতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘ছোট’ ও ‘হেয়’ করে বক্তব্য রাখছে। একইসাথে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পেছনে জাসদ ও গণবাহিনী দায়ী বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন আসাদুজ্জামান রিপন।
জাসদকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনাদের (জাসদ) অপকর্ম সম্পর্কে শুধু এখন আমরাই বলি না, শাসক দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে আপনাদের অপকর্মের কথা প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, হাসানুল হক ইনুকে জবাব দিতে হবে, ১৯৭২-৭৫ সালে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে আপনার কী ভূমিকা ছিল? আপনার গণবাহিনীর কী ভূমিকা ছিল? আপনার দলের কী ভূমিকা ছিল? এ বিষয়গুলোতে ইনু সাহেবদের অবস্থান জাতির কাছে স্পষ্ট করা উচিৎ।
তিনি বলেন, যে অভিযোগ জাসদের বিরুদ্ধে উঠেছে, যে অভিযোগ গণবাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে, যে অভিযোগ হাসানুল হক ইনুর দিকে অঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছে, এর জবাব দিতে না পারলে তার পদত্যাগ করা বাঞ্ছনীয়।
তথ্যমন্ত্রীর বর্তমান ভূমিকা নিয়ে রিপন বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জাসদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নেতিবাচক। তারা এখন কথায় কথায় বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন। কারণ একটাই, তারা গণধিকৃত ও গণবিচ্ছিন্ন। তারা মনে করছেন, শুধু বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি কথা যদি বলা যায়, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যায়, তাহলে বোধহয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব খুশি হবেন। তার মন্ত্রীত্ব রাখবেন।
বিএনপির কারাবন্দী যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও রুহুল কবির রিজভীর সুচিকিৎসা ও দ্রুত মুক্তির দাবি জানান আসাদুজ্জামান রিপন।
রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান, এএসএম আবদুল হালিম, আইন বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, শাহ নূরুল কবির শাহিন, শাহানা আখতার শানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।