ঢাকা: চাঞ্চল্যকর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ২ জনের খালাসের রায় দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। রোববার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৪ জানুয়ারি এই মামলার রায় ঘোষণা দিন ধার্য থাকলেও হরতালে নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদের আদালতে উপস্থিত করতে না পারায় রায় পিছিয়ে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে, গত ২৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ৪ জানুয়ারি (বুধবার) দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও ২৮ জানুয়ারি আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এডভোকেট তাসলিমা ইয়াছমিন দিপা ও আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ও এডভোকেট জামান উদ্দিন আহম্মেদ।২৮ জানুয়ারি জামিনে থাকা ৭ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত।
উক্ত আসামিরা হলেন- মো. নাজমুল হুসেইন প্লাবন, শফিউল আলম সেতু, অভিনন্দন কুণ্ড অভি, মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ, নাজমুস সাকিব তপু, মাজহারুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান সোহাগ।
গত বছর ২৭ নভেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মোট ২৭ জনের বিভিন্ন সময় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। মামলার উল্লেখ্যযোগ্য সাক্ষীরা হলেন- নিহত জোবায়েরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকালীন প্রাণ-রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম বদিয়ার রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন, পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক বর্তমান পিপলস ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিঞা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বর্তমান ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মীর শাহীন শাহ পারভেজ। তবে মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ও নিহত জোবায়েরের প্রেমিকা মুশাররাত মাহেরা নিটল সাক্ষী দেননি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে জুবায়ের আহমেদকে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করে। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জুবায়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪।
মামলার পলাতক আসামীরা হলেন: খন্দকার আশিকুল ইসলাম, খান মোহাম্মদ রইস, রাশেদুল ইসলাম রাজু, ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম ও জাহিদ হাসান।