দিরাইয়ের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কালীয়াগুটা হাওড়, কৃষকরা দিশেহারা

0
494

Deraiআবুল হোসাইন, দিরাই প্রতিনিধি: দিরাইয়ের সর্ববৃহৎ কালীয়াগুটা হাওড় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে, শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক। পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে কৃষকের সোনালী ফসল। কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পানি কেড়ে নিয়েছে কৃষক পরিবারের মুখের হাসি। তলিয়ে যাওয়া ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের সাথে মাঠে নেমেছেন স্কুল পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা। ডুবুডুবু ধান কাটতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সকলেই। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, হাওড়পাড়ের কৃষকরা। গতকাল সরজমিনে কালীয়াগুটা হাওড়ে গিয়ে দেখা যায়, দিরাই উপজেলার সর্ববৃহৎ হাওড় প্রায় সবটুকু পানিতে তলিয়ে গেছে।হাওড়ের উপরি ভাগের জমির কিছু ফসল তুলতে পারলে ও নিচু অংশের সবটুকু পানির নিচে নিমজ্জিত। কালিয়াগুটা হাওরে গিয়ে দেখা যায়,শ্রমিক সংকটের কারনে স্বামীকে সহযোগিতা করার জন্য দত্তগ্রামের রিুতু মোহন দাসের স্ত্রী বিনতী রানী দাস স্কুল পড়–য়া দুই মেয়েকে নিয়ে ডুবন্ত পাকা ধান কেটে শুকনো জায়গায় তুলছেন।

একই গ্রামের কৃষক অনন্ত লাল দাস(৪৫) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,মেঘের পাইন্যে ধানি জমি তলই গেছে ,বৈশাখ মাইয়া দিন ও দিনরাইত ইলাখান বর্ষন দেখিনাই,আমি ষোল কেয়ার জমি করছিলাম ১২ কেয়ার মেঘের পাইন্যে তলই গেছে। ধলকতুব গ্রামের ইউ/পি সদস্য তাজুল ইসলাম বলেন,কালীয়াগুটা হাওড়ের ষোল আনা জমির মধ্যে ১৪ আনা জমি ডুবে গেছে। ধান কাটার জন্য প্রতি কেদারে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা দিলেও শ্রমিকরা এই পানিতে ধান কাটতে রাজি হচ্ছেনা। হাওড়ে বাবা-মায়ের সাথে পানি থেকে পাকা ধান তুলার কাজে সহযোগীতা করার জন্য দত্তগ্রাম আলোর দিশারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী নিপা রাণী দাস বলেন,আমাদের লেখা-পড়া করার একমাত্র মাধ্যম বাবার কৃষি কাজ আমাদের চোখের সামনে পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে তা দেখে সহ্য হচ্ছেনা। এই জন্য বাবার কাজের সহযোগীতা করার জন্য বিদ্যালয় না গিয়ে ধান তুলতে এসেছি। এ ব্যাপারে ইউ/পি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম চৌধুরী লিটন জানান,টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হাওড় থেকে পানি বের হতে না পারায় কালীয়াগুটা হাওড়ের প্রায় সব পাকা জমি তলিয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শফিকুর রহম্না বলেন, কালীয়াগুটা হাওড়ের প্রায় তিনসহশ্রাধিক পাকা জমি তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে । হাওড় থেকে পানি সরানোর জন্য চেষ্টা করছি। দিরাই উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছবি চৌধুরী বলেন,কালীয়াগুটা হাওড়ে গিয়ে দেখেছি শ্রমিক সংকটে অনেক মহিলারা ও স্কুল পড়–য়া ছাত্রীরা ধান তুলার কাজে নেমেছে তাদেরকে সহযোগীতা করা অতি জরুরী। উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, গতকাল কালীয়াগুটা হাওড়ের পরিদর্শনে গিয়েছিলাম দেখেছি কৃষকদের হাহাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবার গুলোকে সহযোগীতার জন্য চেষ্টা করছি।