
আবুল হোসাইন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের বন্দুকযুদ্ধে নিহত সুমন এখন শুধুই স্মৃতি। মেধাবি ছাত্র সুমনের স্মৃতি ধরে রাখতে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের শ্যামারচর গ্রামে তার সহপাঠীরা সুমন স্মৃতি সংসদ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে। নিহত সুমনের স্বরনে ঈদের পরদিন রোববার ওই সংঘঠনের উদ্যেগে আয়োজন করা হয় সুমন স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তির। ব্রজেন্দ্রগঞ্জ আর সি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সুমন স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তি পরীক্ষায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেনীর ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩০ জনকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
া জগদিশ সামন্ত দাসের সভাপতিত্বে এবং সজীব কান্তি দাসের পরিচালনায় বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অবনি মোহন দাস, পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান বুলবুল, সুমন দাসের মুক্তিযোদ্ধা পিতা হরিধন দাস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি সিরাজদৌলা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক রঞ্জন রায়, শিক্ষক আবুল হাসিম,জালাল উদ্দিন,পরিতোষ রায়,নাজমুল হাসান, শিশির অধিকারি,আমির হামজা, মলয় সরকার,অসীম তালুকদার.প্রমথ তালুকদার,সুকান্ত হাজরা, ময়নুল হাসান প্রমুখ। আলোচনা সভার আগে তার আত্মার শান্তি কামনায় দাড়িয়ে ১ মিনিটি নিরবতা পালন করা হয় । ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয় সুমন। পিতা হরিধন দাস একমাত্র পুত্র সুমন দাসকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্ন ছিল ছেলে এমবিএ পাস করে চাকরি করবে, সংসারের হাল ধরবে। উচ্চ শিক্ষার্থে সিলেটে পাঠানো একমাত্র পুত্র সুমনকে হারিয়ে বাবা, মা ও তিন বোন আজও শোকে মন্থর। সুমন দাসের মুক্তিযোদ্ধা পিতা হরিধন দাস পুত্রের স্মৃতি চারন করতে গিয়ে বলেন, ওই দিনের কথা আমি ভুলতে পারবো না, যেদিন একটি বুলেট আমার সবকিছু শেষ করে দেয়। আমার শেষ স্বপ্নই শেষ হয়ে গেছে সেইদিন। কষ্টের সাথে যুদ্ধ করে তিল তিল করে জমানো অর্থ দিয়ে হরিধন দাস লেখাপড়ার যোগান দিয়ে আসছিলেন ছেলেমেয়েদের। সন্তানেরা খুবই মেধাবী হওয়ায় শত কষ্ট হলেও পড়াশোনার পিছু ছাড়েননি পিতা। বড় মেয়ে কাকলী দাসের চাকরি হলে একটু নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। শেষ ইচ্ছা সোনার টুকরো, আদরের একমাত্র ছেলে সুমনকে উচ্চশিক্ষিত করার। ভর্তি করেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে। বড় বোন কাকলীও একমাত্র ভাইকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রত্যয় নিয়ে বাবার পাশে দাঁড়ায়। একমাত্র ভাইকে পড়াশোনার যোগান দিতে গিয়ে বিয়ে করতে চাননি বোন কাকলী। বাবা মাকে জানিয়ে দেয়, ভাইটি ভার্সিটির পড়া শেষ করে চাকুরী পেলে তবেই বিয়ে করবেন। কিন্তু বোন কাকলীর স্বপ অধরাই রয়ে গেল।