ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমরা আমলাতন্ত্র নয়, গণতন্ত্র চাই। আমরা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। উপজেলা পরিষদ এখন আমলারা চালায়। বাংলাদেশে গণতন্ত্র কেবল একদিনেই আসে, তা হলো ভোটের দিনে। জাতীয় পার্টি একদিনের গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। আমরা ক্ষমতায় গেলে উপজেলা চেয়ারম্যানদের হাতে পরিষদ চালানোর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা ফিরিয়ে দেব।
রাজধানীর বনানীতে রাজউক মাঠে শুক্রবার বিকেলে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটি (উত্তর) আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এরশাদ একথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
এরশাদ বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক পরিষদ করে জনগণের কাছে ক্ষমতা দিব। আমরা নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে চাই। জাতীয় পার্টি জনগণের নন্দিত পার্টি, নিন্দিত নয়। দুই দলের হাত থেকে (আওয়ামী লীগ-বিএনপি) মানুষ রক্ষা পেতে চায়। জাতীয় পার্টি আছে, মানুষের মনের ইচ্ছা পূরণ করবে। এ সময় তিনি দলের শ্লোগান হিসেবে উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় পার্টি একশ’ একান্ন।’
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি মরে নাই। আমরা দেখাতে চাই, জাতীয় পার্টি কারো চেয়ে কম নয়। পার্টিকে সুসংগঠিত করতে আমি রাজপথে নেমেছি, সংসদেও আছি। নির্বাচনের চার বছর বাকি আছে। গ্রামে-গঞ্জে, ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বলতে হবে, জাতীয় পার্টি একশ’ একান্ন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ছিনতাইকারীরা গৃহবধূকে টেনে-হিচড়ে হত্যা করছে। ছাত্রদের অত্যাচারে ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আর বলা হচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন করা হচ্ছে। এটা নারীদের প্রতি বিদ্রুপ। সমাজ হতাশায় ভুগছে। সমাজের মানুষ বাঁচতে চায়। মানুষ জাতীয় পার্টির কথা ভাবছে।
ছিনতাই বাড়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজে বেকারত্ব বেড়েছে। কর্মসংস্থান নেই। যুব সমাজ বাবা-মার বোঝা হয়ে গেছে, সমাজের বোঝা হয়ে গেছে। তারা মাদকাসক্ত হচ্ছে। আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি না। যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।
এরশাদ বলেন, মানুষের জীবনের মূল্য নেই। আমাদের একটাই চিন্তা, ক্ষমতায় যাওয়া আর টিকে থাকা।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশে বিনিয়োগ নেই, বিনিয়োগের পরিবেশও নেই। ঢাকা শহর যানজটে নাকাল, বিদেশীরা আসতে চায় না। শিক্ষার হার বেড়েছে, শিক্ষার মান বাড়েনি। শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না।
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মুহম্মদ কাদের, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মীর আব্দুস সবুর প্রমুখ।