Home আইন বাংলাদেশে বিয়ের বয়স: সমালোচনায় ইইউ পার্লামেন্ট ওমেনস রাইটস

বাংলাদেশে বিয়ের বয়স: সমালোচনায় ইইউ পার্লামেন্ট ওমেনস রাইটস

432
0

IT
লন্ডন: সম্প্রতি মন্ত্রী পরিষদে ছেলে ও মেয়ের বিয়ের বয়স পুননির্ধারণ প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ওমেন রাইটসের ভাইস চেয়ার বারবারা মাটিরা। এ নিয়ে ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ম্যাগাজিন ‘দ্য পার্লামেন্ট’ এ তিনি ‘নিউ বাংলাদেশ ম্যারিজ ল ইজ এ ব্লাউ টু চিলড্রেন্স এন্ড ওমেন্স রাইটস’ শীর্ষক এক প্রবন্ধ লেখেন।
বারবারা দ্য পার্লামেন্টে লেখেন, বাংলাদেশ ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স সংশোধন করে নতুন আইন পাশ করতে যাচ্ছে যাতে ১৮-১৬ বছর বয়সে বিয়ে করার আইনি অনুমতি রয়েছে।
বারবারা তার প্রবন্ধে পরিস্কারভাবে লিখেছেন যে এর ফলে ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স নির্ধারণে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার যে অঙ্গীকার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে করেছে এখন তা থেকে সরে আসছে।
বারবারা তার নিবন্ধে পরিসংখ্যান দিয়ে লিখেছেন, বাংলাদেশে ৬৬% মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই, তিনভাগের একভাগ মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় ১৫ হওয়ার আগে, ২০ বছর বয়স হওয়ার আগে ৭৪%, আর ১৮ হওয়ার আগে ৪৯%।
এতে নারীদের শিক্ষাসহ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ইউনিসেফের রিপোর্ট উল্লেখ করে দ্য পার্লামেন্ট ম্যাগাজিনে লিখেছেন ৪৫% নারীদের ক্ষেত্রে দেখে যায় তারা সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তি হলেও উপস্থিতি খুব কম থাকে। তার মতে, কম বয়সে প্রেগন্যান্ট হওয়ার কারণে বাংলাদেশের ১৫-১৯ বছর বয়সী নারীরা মাতৃঝুঁকির মধ্যে থাকে।
প্রবন্ধে তিনি আরো লেখেন, গত জুলাই মাসে গার্ল সামিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্য বিবাহ কমিয়ে আনার ঘোষণা শুনিয়েছিলেন।
বারবারা শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে লেখেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের ছেলে মেয়ের বিয়ের আইনি বয়সসীমা কমিয়ে আনার পদক্ষেপ এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ বর্তমানে তার ইতিপূর্বে করা অঙ্গীকারের বিপরীতে কাজ শুরু করেছে।
বারবারা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মুখপাত্রের এনালাইসিসের সূত্রে এই পদক্ষেপকে ভালনারেবল হিসেবে উল্লেখ করে লিখেছেন, বাংলাদেশের এহেন পদক্ষেপ লাখো লাখো ছেলে মেয়েদের সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে, যে সামান্য উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা থেকে পেছনে নিয়ে যাবে।
সবশেষে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে এ বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়ে বলেন, এশিয়ার এই দেশ বাংলাদেশ যেন তরুণ তরুণীদের জীবন মান উন্নয়নে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে অঙ্গীকার করেছে তা রক্ষা করে বা মেনে চলে কিনা খতিয়ে দেখা এবং একই সাথে ইইউ এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে যে ফান্ড দিয়েছে তার যথাযথ ব্যবহারে ব্যাপারে পূর্ণ সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন ।
উল্লেখ্য বারবারা মাটিরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উইমেনস রাইটস এবং জেন্ডার ইকুয়ালিটি কমিটির ভাইস চেয়ারের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি গ্রুপ অব দ্য ইউরোপীয়ান পিপলস পার্টি থেকে আগত একজন ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেট। এই কমিটির চেয়ার হচ্ছেন স্পেনের ইরাক্সি গার্সিয়া পেরেজ- তিনি গ্রুপ অব দ্য প্রোগ্রেসিভ এলায়েন্স অব সোশ্যালিস্ট এন্ড ডেমোক্রেটস এন দ্য ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট এর সদস্য।

Previous article২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা
Next articleখালেদার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ১৮ ডিসেম্বর