ঢাকা: মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য কমিশনে আসা বেশিরভাগ অভিযোগই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন: চাই প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রিপোর্ট পেশ করেন আসকের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আকলিমা ফেরদোস লিসা। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, এ এন এন আই ফোকাল পার্সন জয়েস খোয়ান, সংবাদকর্মী, মানবাধিকারকর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে মিজানুর রহমানকে প্রশ্ন করা হয়, দেশে কাদের মাধ্যমে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মানবাধিকার কমিশনে এখন পর্যন্ত যত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে, তার সিংহভাগই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব সরকারের জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কোনো ব্যক্তি মানবাধিকার লঙ্ঘন করল, কিন্তু রাষ্ট্র তা কঠোর হস্তে দমন করল না। এতে ধরে নিতে হবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি রাষ্ট্রীয় মদদেই হয়েছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, একজন অপরাধীরও যে মানবাধিকার রয়েছে, এটা আমরা অনেকেই মানতে চাই না বা জানি না।
সম্প্রতি ডিএমপি এবং তার মধ্যকার বক্তব্য নিয়ে উত্তেজনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ ও মানবাধিকার কমিশন কখনোই মুখোমুখি অবস্থানে নেই। একেকজনের প্রতিক্রিয়া একেক রকম হতেই পারে।
এ সময় পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে ড. মিজান বলেন, নির্দেশ দেওয়ার পরও তা না মানা হলে কি বলা যায়? সেটিকে পুলিশের চেইন অফ কমান্ড ভেঙে গেছে বললে দোষের কী?
মানবাধিকার কমিশন অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের একটি মাত্র অফিস, ঢাকায়। মাত্র ৮ জন কর্মকর্তা। তারা বুদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও পারতোপক্ষে কমিশন কাউকে খালি হাতে ফেরান না।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মিজানুর রহমান বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় শুধুমাত্র কমিশনই একমাত্র পথ, এটা ভাবা ঠিক নয়। সুশীল সমাজ, সাধারণ মানুষসহ সবাইকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
র্যা বের গুলিতে পঙ্গু কলেজছাত্র লিমনের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লিমনের ক্ষতিপূরণ আমরা দিতে পারি না। তবে বিচার বিভাগ দিতে পারে।