মার্কিন অভিযানই আইএসের সৃষ্টি করেছে: ওবামা

0
1075

Wobama
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের কারণেই স্বঘোষিত ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএল) সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। ওই আগ্রাসনের অনভিপ্রেত উদ্ভব ঘটেছে আইএসের।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ভাইস নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আলকায়েদা থেকে সরাসরি আইএসআইএলের সৃষ্টি হয়েছে এবং ইরাকে আমেরিকার সেনা অভিযানের ফলেই এর উদ্ভব ঘটেছে। তিনি ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানের অনভিপ্রেত পরিণাম বলে অভিহিত করেছেন। ওবামা বলেন, এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের উচিত কোনো বিষয়ে পদপে নেয়ার আগে ল্য স্থির করা।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নীতিকে তিনি অনুসরণ করছেন না বলে উল্লেখ করে ওবামা বলেন, তিনি ৬০টি দেশকে নিয়ে জোট গঠন করেছেন, তার বিশ্বাস, তা ইরাক থেকে ধীরে ধীরে আইএসআইএলকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হবে। ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের সাথে মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রবাদের সৃষ্টির সম্পর্ক থাকার কথা এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্বীকার করলেন। জাতিসঙ্ঘকে পাশ কাটিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীরা অবশ্য ২০১১ সালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার ওবামার সিদ্ধান্তকে ওই অঞ্চলে উগ্রবাদের সৃষ্টির কারণ বলে থাকেন। তাদের দাবি, দ্রুত সেনা প্রত্যাহারের কারণে আইএসের মতো গ্রুপগুলোর উত্থান ঘটেছে। এ জন্য ইরাকের শিয়া নিয়ন্ত্রিত সরকারকেও তারা দায়ী করে বলেছেন, সংখ্যালঘু সুন্নিদের প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে অস্বীকার করার মাধ্যমে সরকার দেশটিতে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। প্রেসিডেন্ট ওবামাও এ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের মৌলিক সমস্যা হলো ‘কোটি কোটি বিুব্ধ সুন্নি তরুণ’ যারা ধর্মীয় চেতনার পন্থায় তাদের হতাশার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন। তিনি বলেন, তাদের এ হতাশা নিরসনের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে, তাদেরকে উন্নত জীবন গঠনে শিক্ষালাভ ও পেশাগত দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দেয়া।
অন্যান্য দেশকে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, ফেডারেল বাজেটের মাত্র ১ শতাংশ অন্যান্য দেশে পাঠানো হয়। ওবামা বলেন, আমরা কূটনীতি, উন্নয়ন ও শিক্ষা থেকে পুরোপুরি আলাদা থেকে সন্ত্রাস মোকাবেলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা চিন্তা করতে পারি না, এগুলোকে নমনীয় বিষয় বলে গণ্য করা হলেও তা বাস্তবিকপক্ষে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
রিপাবলিকানরা নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে শত শত কোটি ডলার অপচয় করার জন্য ওবামাকে দায়ী করেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা এ ক্ষেত্রে কোনো অর্থ ব্যয় করিনি। ওবামা প্রশাসন ২০১৬ সালের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে পাঁচ হাজার কোটি ডলার প্রদানের জন্য কংগ্রেসের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে আইএস মোকাবেলা ও মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য। সাক্ষাৎকারে ওবামা মধ্যপ্রাচ্যের অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধের রাজনৈতিক সমাধান অর্জিত না হলে সেখানে উগ্রবাদের হুমকি থেকেই যাবে।