ডেস্ক রিপোর্ট: ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৫ পাস করা হয়েছে। দশম সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে সোমবার বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশের পর বিলটি পাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ জাতীয় সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর আগে বিলটির বিভিন্ন ধারায় আনা সংশোধনী প্রস্তাব ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, হাজী মো. সেলিম, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, ফখরুল ইমাম, শিরীন আক্তার, নূরুল ইসলাম ওমর, মেহজাবীন মোরশেদ, রওশন আরা মান্নান সংসদে বিলটির বিভিন্ন প্রবিধানের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব আনেন। জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনের ৩য় দিনের বৈঠকে বিলটি উত্থাপিত হয়। গত বছরের ১ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটির খসড়া অনুমোদন পায়।
বিলে ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইনে পুলিশকে অপরাধ তদন্তসহ বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশী ও মালামাল বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
ফরমালিনের আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও অপব্যবহারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আইনে এ ধরনের অপরাধ জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে বিচারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বিলে ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি অবৈধভাবে রাখার জন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অপরাধ সংগঠনে ব্যক্তি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অভিযুক্ত করা ও শাস্তির আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আইনে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত ভঙ্গ করলেই সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। অবৈধভাবে ফরমালিন মজুদের জন্য ২ থেকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া আইনটি বাস্তবায়নে প্রতি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ কমিটি’ গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে কমিটিতে কারা থাকবেন সে বিষয়ে বিলে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।