
ঢাকা: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ঘিরে চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য জাতীয় সংলাপের প্রয়োজন বলে মনে করেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। শনিবার বিকেলে সোহরাওরার্দী উদ্যানে নাগরিক ঐক্যের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। হরতাল-অবরোধে সহিংসতা বন্ধ ও জাতীয় সংলাপের দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য। অবস্থান কর্মসূচিতে রাজনীতিবিদ, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেয়।
ড. কামাল বলেন, ‘২০০৭ সালে সংস্কারপন্থী শব্দটিকে খারাপ শব্দ বলা হয়েছিল। আর এখন সংলাপ শব্দটিকে খারাপ শব্দ বলা হচ্ছে। সংলাপ কি খারাপ শব্দ?’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। আর সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য জাতীয় সংলাপের প্রয়োজন। জনগণ হচ্ছে ক্ষমতার মালিক। অথচ সেই মালিককে আজ অবজ্ঞা করা হচ্ছে।
শান্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংবিধানের অন্যতম এ প্রণেতা বলেন, ‘সরকার পারছে না, জনগণকে পারতে হবে। আমাদের প্রমাণ করতে হবে, আমরা মোটেই নিষ্ক্রিয় নয়। বাঙালি কখনো অন্যায় মেনে নেয়নি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘জাতীয় সংলাপ করতে হবে, নয়তো পরিণতি হবে ভয়াবহ। অবিলম্বে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এই মাঠে বলেছিলেন- আমরা ভাতে মারবো, পানিতে মারবো। এটা বলেছিলেন বিদেশিদের জন্য। আর তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে (খালেদা জিয়া) এখন এই অবস্থা করা হচ্ছে। ধৈর্যের সীমা আছে, সহনশীলতার সীমা আছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মনে হচ্ছে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমরা সহিংসতা, নাশকতার বিরোধিতা করি, শান্তিও চাই। এ জন্য সংলাপের বিকল্প নাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জাতীয় সংসদকে ‘চিড়িয়াখানা সংসদ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, সংসদ নামক চিড়িয়াখানায় এরশাদও বসে। কী লজ্জার! গায়ের জোরে দমন করা যায় না। এরশাদেরও পতন হয়েছে।
এ সময় ৫ জানুয়ারিরির নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নির্বাচন বলে সমালোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন, জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংলাপ হয়েছে। খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনার মধ্যে কী এমন হয়েছে যে, তাদের সংলাপ হবে না? দয়া করে আমাদের গৃহযুদ্ধের হাত থেকে রেহাই দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সভাপতি খালেকুজ্জামান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর। উপস্থিত ছিলেন স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।