Home জাতীয় সংবাদের সুবাদে কোন শিশু যেন বৈষম্যের শিকার না হয়: ড. মিজান

সংবাদের সুবাদে কোন শিশু যেন বৈষম্যের শিকার না হয়: ড. মিজান

1012
0

Dr. Mizan 02
সিলেট: সংবাদপত্রের নীতি-নৈতিকতার সার্বিক দিকনির্দেশনা ছাড়া শিশুর জন্য নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই শিশুর জন্য নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমসমূহের জন্য একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রয়োজন যা সাংবাদিকতায় নীতি-নৈতিকতার চর্চা বৃদ্ধিতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। সাংবাদিকতায় নীতি-নৈতিকতা: প্রসঙ্গ শিশু বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় এমআরডিআই সিলেটের স্থানীয় একটি হোটেলে এ মতবিনিময়সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনফোকাস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এপি এর সাবেক ব্যুরো চীফ ফরিদ হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এমআরডিআই এর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর।
মূল প্রবন্ধে ফরিদ হোসেন বলেন, শিশু সংক্রান্ত সকল খবরে নীতি-নৈতিকতার মৌলিক বিবেচনা একান্ত জরুরী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোন প্রতিবেদন যেন কোন শিশুর জন্য কলঙ্ক, অনিষ্ট বা ক্ষতির কারণ না হয় এবং শিশুর সম্পর্কে বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি না করে সে বিষয়ে গণমাধ্যম সমূহকে অতিশয় যত্নবান হতে হবে। একই সাথে কোন প্রতিবেদন যেন শিশুর মনে কোন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে সেটিও নিশ্চিত করা জরুরী। এজন্য গণমাধ্যমসমূহে নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকতার নীতিমালা কোন আইন নয়, তা হওয়া বাঞ্চনীয়ও নয়। কারণ আইনী বাধ্যবাধকতা নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে পারে না। তিনি প্রবন্ধে শিশু বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরীতে নীতি-নৈতিকতা লংঘনের বেশ কয়েকটি উদাহারণও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, শিশু বিষয়ক ও শিশুদের নিয়ে সংবাদ প্রচারে সংবাদ মাধ্যমগুলোকে বাংলাদেশের শিশু আইন এবং আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে উল্লিখিত নির্দেশনাসমূহ বিবেচনায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম শিশুকে যেভাবে প্রতিফলিত বা উপেক্ষা করে তা শিশুদের জন্য নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। শিশুদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রয়োজন বড়দের চেয়েও বেশী। সংবাদের সুবাদে কোন শিশু যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, অযাচিতভাবে ব্যবহৃত না হয় সেইদিকে সংবাদমাধ্যমগুলোর বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে এমআরডিআই এর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর বলেন, শিশু সম্পর্কে আমাদের গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার। শিশুকে সহানুভূতি ও করুণার দৃষ্টিতে দেখা নয় বরং প্রতিটি শিশুকে সম্ভাবনা ধরে নিয়ে তার প্রতি প্রাপ্য সম্মান ও মনোযোগ প্রদর্শন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, শিশু সম্পর্কে এবং শিশুর জন্য জরুরী বিষয়ে খবর বাড়ানো এবং এর সঠিক উপস্থাপন নৈতিকতার বড় দাবী। সচরাচর সংবাদসমূহ বড় পাঠকদের মাথায় রেখে তৈরী করা হয়, সেখানে শিশুর উপর বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু থাকা নৈতিকতার পরিপন্থী।
এই মতবিনিময়সভায় সিলেট জেলা এবং সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলার বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকবৃন্দ, সংবাদকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং শিশু বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

Previous articleগণতন্ত্রের অনুপস্থিতিই চলমান সংকটের কারণ: মাহবুবুর
Next articleজগন্নাথপুরে মহিলার মৃত্যু নিয়ে রহস্য