ঢাকা: শিশুদের পরিচর্যার মাধ্যমে তাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে উদ্বুদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক্ষেত্রে কাজ করার জন্য শিশু-কিশোর সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখণ্ডে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মের জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সুমহান ঐতিহ্য।
মূল্যবান এ ঐতিহ্যকে লালন করতে শিশু-কিশোরদের মাঝে শৈশব থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, নিজস্ব সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনার বীজ বুনতে হবে যাতে করে তাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা, দেশপ্রেম ও ভালোবাসা গড়ে ওঠে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি।
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী অবস্থার কথা তুলে ধরে শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে আবদুল হামিদ বলেন, তোমাদের এ বয়সে আমরা ছিলাম পরাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের না ছিল কথা বলার স্বাধীনতা, না ছিল মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংস্কৃতি চর্চাও ছিল রীতিমতো কঠোর শৃঙ্খলে আবদ্ধ।
তোমরা আজ তা থেকে মুক্ত। তোমাদের চিন্তার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংস্কৃতি চর্চার স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা আজ সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। তোমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। তাই তোমাদের সামনে আজ অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত। পাঠ্য বইয়ের বাইরেও ছবি আঁকা, আবৃত্তি, নাচ, গান, অভিনয়, গল্প বলাসহ বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের চর্চা করতে শিশুদের উৎসাহিত করেন রাষ্ট্রপতি।
তাদের তথ্য-প্রযুক্তিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারে সারা বিশ্ব আজ হাতের নাগালে এসেছে। এ যেন আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ। ছোঁয়া দিলেই জ্ঞানের দৈত্য এসে হাজির।
কম্পিউটারে একটা ক্লিকে বিশ্বের সব তথ্য মুহূর্তে তোমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। তোমরা তা থেকে সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। আমাদের সময় এ ছিল কল্পনাতীত, অবিশ্বাস্য। এ দিক থেকেও তোমরা সৌভাগ্যবান। আমি চাই, তোমরা এ প্রযুক্তিকে ভাল কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে।
শিশুদের গ্রামে যাওয়ার উপদেশ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমরা যারা আজ শহরে বড় হচ্ছো, তোমাদের অনেকেরই দাদা-নানার বাড়ি কিন্তু গ্রামে। ছুটি পেলে তোমরা অবশ্যই গ্রামে তাদের কাছে ছুটে যাবে। দেখবে তোমাদের পেয়ে তারা কত আনন্দিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি পান্না কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সামসুজ্জামান খান, খেলাঘরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন অধিকারী, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।