ডেস্ক রিপোর্ট: ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিব হত্যাকান্ডে খন্দকার মোস্তাকের সাথে শেখ ফজলুল করিম সেলিমেরও আতাত ছিল – এমন মন্তব্যই করলেন সে সময়ের সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ। “শুধু ফারুক নয়, এর পিছনে আরো শক্তি ছিল যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল এবং ক্ষমতার লোভেই তারা এই কাজ করেছিল। কে এম সফিউল্লাহ যদি সময় মত ব্যবস্থা গ্রহণ করতো, তাহলে বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানো যেতো।” – শেখ সেলিমের এমন মন্তব্যের জেরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি’র এক সাক্ষাতকারে কে এম সফিউল্লাহ এমন মন্তব্য করেন।
কে এম সফিউল্লাহ সেসময়ে শেখ সেলিমের নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে সাক্ষাতকারে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ব্যাপার শেখ ফজলুল করিম সেলিম কী বলে তাতে আই ডোন্ট কেয়ার। তবে আমি তো মনে করবো শেখ মুজিব হত্যাকান্ডে খন্দকার মোস্তাকের সাথে শেখ ফজলুল করিম সেলিমেরও আতাত ছিল। যদি তা না হয় তবে শেখ ফজলুল করিম সেলিম কেন ১৫ আগস্ট আমেরিকান দুতাবাসে গিয়েছিল?
এর আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আর্মি যখন বঙ্গবন্ধুর বাসায় ঢুকে পড়ে তখন তিনি তৎকালীন সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহকে বলেন, তোমার আর্মি আমার বাসায় আক্রমণ করেছে। তুমি ইমিডিয়েট ব্যবস্থা গ্রহণ কর। বঙ্গবন্ধুর এই কথা শুনে প্রথমে কে এম সফিউল্লাহ বলেছেন, ঠিক আছে স্যার আমি দেখছি।
শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ বলেন, না বঙ্গবন্ধু আমাকে ফোন করেননি। আমি সকাল সোয়া পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার ভেতর ঘটনাটি জানতে পারি এবং জানার সাথে সাথে আমি বঙ্গবন্ধুকে রিং করি।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ঐ সময় কে এম সফিউল্লাহ ধানমন্ডি ৩২ আসার কোনো চেষ্টা করেনি। কিংবা ধানমন্ডি ৩২ বঙ্গবন্ধুর বাসায় কী ঘটছে তার তদন্ত করার জন্যও পাঁচটা ট্যাংক নিয়েও তিনি আসেনি।
এ বিষয়ে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, ট্যাংকগুলো মাসে দুইবার নাইট ট্রেনিং করতো। ১৫ আগস্ট নাইট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। তাই ১৫ আগস্ট নাইট ট্রেনিংয়ের নাম করে তারা ট্যাংক ব্যবহার করেছিল। যাতে করে কেউ কোনো সন্দেহ না করে।
ট্যাংকের ব্যাপারে শেখ ফজলুল করিম সেলিম কে এম সফিউল্লাহের প্রতিউত্তরে বলেন, এটা মোটেও সত্য নয়। তিনি সব মিথ্যে কথা বলেছেন।
এবিষয়ে কে এম সফিউল্লাহের বলেন, আমি যখন জানতে পেরেছি কেউ আর জীবিত নেই, তখন সেখানে আমার যাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। মৃত দেহ দেখে আমার কী লাভ হত?
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ঐ দিন কে এম সফিউল্লাহ নিরবতা পালন করেছিল এবং তিনি বাসা থেকে বের হয়নি। মারা যাওয়ার পর তিনি মিটিংয়ে করেছিল।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, আমি যদি ঐ দিন মারা যেতাম তাহলে লাভটা কী হত?
মার্কিন দুতাবাসে যাবার বিষয়ে শেখ সেলিম, না না আমি মার্কিন দুতাবাসে কেন যাব? কে এম সফিউল্লাহ কি আমাকে যেতে দেখেছিল? তাহলে তো উনিও সেখানে গিয়েছিল।
কে এম সফিউল্লাহ আরো বলেন, ১৫ আগস্ট আমার কোনো ভুল ছিল না। কিন্তু ঐ দিন যা হয়েছে তাতে আমার কোনো করণীয় ছিল না।