অর্থহীন জেলা পরিষদ নির্বাচন করব না: এরশাদ

0
863
blank
blank

ঢাকা: প্রায় তিন দশক আগে যার সরকারের অধীনে প্রথম জেলা পরিষদ আইন হয়েছিল, সেই হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ‘অর্থহীন’ মনে করছেন।

রবিবার রাজধানীর গুলশানে একটি কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “জেলা পরিষদ নির্বাচন করব না। কারণ এই নির্বাচন অর্থহীন।

“ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১৪৫ জন লোক মারা গেছে। আমরা হত্যা, হানাহানি এবং অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।”

১৯৮৮ সালে এইচ এম এরশাদের সরকার যে আইন করেছিলেন, সেখানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল, পরে ওই আইন অকার্যকর হয়ে পড়ে। ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়। আর কোনো জেলা পরিষদে কখনো ভোট হয়নি।

২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনের জন্য নতুন আইন করে। পরের বছর ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।

অনির্বাচিত ওই প্রশাসকদের মেয়াদ শেষে আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচন হচ্ছে, যেখানে দলীয় মনোনয়নের সুযোগ রাখা হয়নি।

সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হলেও জেলা পরিষদ আইনে প্রত্যক্ষ ভোটের বিধান নেই। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ভোটেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন।

নির্বাচনের এ পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। তারা বলছে, সরাসরি ভোটে না হয়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম‌্যান নির্বাচন সংবিধান পরিপন্থি।

এই ভোট ‘দেশের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না’ মন্তব‌্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৭ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা জেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।”

জেলা পরিষদ নির্বাচনে না গেলেও ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন এরশাদ।

আর সেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে কীভাবে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা উচিৎ, সে বিষয়ে নিজের মতামতও তিনি তুলে ধরেছেন।

“যারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি বিধিসম্মত, বাস্তবসম্মত নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। যারা সংসদের বাইরে আছে, তাদের কথা বলার কোনো অধিকার নাই।”

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে তার প্রস্তাব জানাতে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন।