আজ পবিত্র শবেবরাত

0
1028
blank
blank

ঢাকা: আজ রোববার ১৪ শাবান ১৪৩৭ হিজরি দিবাগত রাতে পবিত্র শবেবরাত, যা লাইলাতুল বরাত বা ভাগ্য রজনী নামেও পরিচিত। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক ব্যক্তি, জাতি ও দেশের ভাগ্য নির্ধারণ এবং গুনাহ মাফ করে দেন মর্মে কোনো কোনো বর্ণনা থেকে জানা যায়।

এ কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা রাত জেগে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, কবর জিয়ারত, জিকির-আজকার, বিশেষ দোয়াসহ ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রাতটি অতিবাহিত করে থাকেন। অনেকে গরিবদের মধ্যে হালুয়া-রুটি, মিষ্টি ইত্যাদি বিতরণ ও দান-সদকাহ করেন। নফল রোজা রাখেন অনেকে। শবেবরাত উপলে কাল সোমবার সরকারি ছুটি।
শবেবরাত একটি ফারসি বাক্য। শবে অর্থ রাত। বরাত অর্থ ভাগ্য। এ জন্য অনেকে একে ভাগ্য রজনী বলে থাকেন। আবার একে অনেকে লাইলাতুল বরাতও বলে থাকেন। যার শাব্দিক অর্থ মাগফিরাত বা মুক্তির রাত। উপমহাদেশে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে হিজরি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবেবরাত পালন করা হয়। এ রাতে সবার ভাগ্য নির্ধারিত হয় এবং আল্লাহ তায়ালা বান্দার গুনাহ মাফ করেন- এ বিশ্বাস পোষণ করা হয়।
হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসূল সা: মধ্য শাবানের রাতে নফল নামাজ আদায় ও দিনে রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের একটি সূরায় ‘লাইলাতুল মোবারাকাহ’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে- ‘এটা সে রাত যাতে প্রতিটি বিষয়ের বিজ্ঞতাপূর্ণ ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত আল্লাহর নির্দেশে প্রকাশ করা হয়’। (সূরা দুখান, আয়াত ৩ ও ৪ )। কোনো কোনো তাফসিরকারক এ আয়াতকে উদ্ধৃত করে মধ্য শাবানের রাতকে ‘লাইলাতুল মোবারাকাহ’ আখ্যায়িত করে সেটিকেই শবেবরাত বলে অভিমত দিয়েছেন।
হযরত ইকরামাহসহ কিছু তাফসিরকারকের মতে, পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত ‘লাইলাতুল মোবারাকাহ’ দ্বারা শাবান মাসের মধ্যভাগের রাতকে (১৪ শাবান) বোঝানো হয়েছে। এ রাতে প্রত্যেক ব্যক্তি, জাতি ও দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করার দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের ওপর অর্পণ করেন। ইবনে কাসির তার তাফসির গ্রন্থে এবং ইবনুল আরাবি তার আহকামুল কুরআনে ওই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, মধ্য শাবানের রাতে ভাগ্যের ফয়সালা হয়ে থাকে।
অন্য দিকে হজরত ইবনে আব্বাস রা:, ইবনুল উমার রা:, মুজাহিদ রা:, কাতাদা রা:, হাসান বসরিসহ রা: বেশির ভাগ প্রসিদ্ধ তাফসিরবিদ ‘লাইলাতুল মুবারাকাহ’ বলতে লাইলাতুল কদরকে আখ্যায়িত করেছেন, যা রমজান মাসে আসে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল সা: শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন; কিন্তু উম্মতকে এ মাসে বেশি রোজা রাখতে নিষেধ করেন, যাতে রমজানের জন্য সতেজ থাকে। অবশ্য তিনি মধ্য শাবানের রাতে নামাজ আদায় করা ও দিনে রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। (ইবনে মাজা : কিতাবুল ইকামা)।
শবেবরাতের রাতে আলোকসজ্জারও আয়োজন করে থাকে অনেকে। শবেবরাতের রাতে পটকা ফোটানোর একটি প্রবণতা শহরাঞ্চলে ল করা যায়, যা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক এবং বেআইনি। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই পটকা ফোটানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
শবেবরাত উপলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন।