আলোচনার আহ্বান বিএনপির

0
413
blank

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক ইনস্টিটিউশনকে বিতর্কমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে উত্তরণে সংলাপ ডাকতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি, যাতে তারা সহযোগিতা করতে পারে। বর্তমান সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার সকল পথ সহজভাবে গ্রহণের মাধ্যমে অবিলম্বে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা
করে সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেবে বলেও প্রত্যাশা করছে দলটি। গতকাল নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারপারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি কখনই জাতীয় অস্থিরতা পছন্দ করে না। অগ্রগতির জন্য আমরা অস্থিরতাকে সময় উপযোগী বলেও মনে করি না। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সৈয়দ আশরাফ ও তাঁর নেত্রীকে সহযোগিতা করতে চাই। জঙ্গিবাদকে ঠেকানোর জন্য জাতীয় ঐক্য গঠনে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি। আমাদের নেত্রীও চেয়েছেন। সেই দিকে আমরা সৈয়দ আশরাফের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। বিএনপি’র এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যদি হাইকোর্টকে বিতর্কিত করি, সুপ্রিম কোর্টকে বিতর্কিত করি, নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করি, তাহলে আমরা যাবো কোথায়? আমরা যদি সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করি তাহলে সভ্যতা থাকবে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার প্রসঙ্গে দুদু বলেন, আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি ভোটারবিহীন আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার অপউদ্দেশে বিএনপি’র মহাসচিব, জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন মামলায় বিএনপি’র মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারের এসব কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দূরভিসন্ধিমূলক। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বাড়ি ও জমি বাজেয়াপ্ত সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশবাসীসহ আমরা লক্ষ্য করছি যে, বিচার বিভাগকে কীভাবে সরকার প্রভাবিত করছে। হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে সরকার এই মামলা করেছে এবং সাদেক হোসেন খোকার অনুপস্থিতিতে রায় দেয়া হয়েছে। তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন কালিমালেপনের হীনউদ্দেশেই এই রাজনৈতিক নগ্নতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সরকার। খোকার যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার পুরো মালিক তিনি নন। সাদেক হোসেন খোকা নিজেও একটি জাতীয় পত্রিকায় তিনি একটি কোম্পানির ৭ জন শেয়ার হোল্ডারের একজন এবং একটি ক্ষুদ্র অংশের মালিক মাত্র। এ সময় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম করারও আহ্বান জানান বিএনপি’র এ ভাইস চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আবদুল আওয়াল খান, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও বেলাল আহমেদ, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল প্রমুখ। উল্লেখ্য, বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর থেকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সংলাপ চেয়ে এলেও তাতে আওয়ামী লীগ গা করেনি। এর মধ্যে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন বিদায় নিতে যাচ্ছে। নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, তাদের অধীনেই আগামী সাধারণ নির্বাচন হবে। প্রেসিডেন্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন আশা রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বুধবার বলেছেন, তিনি যে কমিশন গঠন করবেন সেটাই হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। পাঁচ সদস্যের নতুন ইসি গঠনে আগেরবারের মতো ‘সার্চ কমিটি’ করা হবে বলেও ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সার্চ কমিটি করেন, আর যাই করেন, জনমতের বাইরে গিয়ে কোনো কমিটি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।