নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নিরাপত্তা দেয়ার অজুহাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক মেয়েকে জোর পূর্বক ধর্ষন করেছে এক নরপশু। তার নাম মোঃ আল আমিন। ধর্ষনের দৃশ্য দেখে ধর্ষক আল আমিনের স্ত্রী তাদের মধ্যে অনৈতিক দৈহিক সম্পর্ক ভেবে ধর্ষিতা শিখাকে অমানবিক নির্যাতন করে ধর্ষকের স্ত্রী। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিখা রাণী চন্দ্র। হত্যা ও ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবার চেষ্ঠা করে হত্যাকারী। শিখা রাণীর মাতা ঘটনাটি জানার পরে এলাকাবাসীকে জড়ো করে তার মেয়েকে হত্যা করার ঘটনা প্রকাশ করলে ধর্ষক ও হত্যাকারী গা ঢাকা দেয়। গতকাল ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইংরেজি তারিখে ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য ও চাঁদপুর গন জাগরন মঞ্চের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত শ্রী সুভাষ চন্দ্রের মেয়ে শিখা রাণী চন্দ্র কে নিরাপত্তার অজুহাতে আশ্রয় দানকারী স্থানীয় গন জাগরন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও যুগ্ন আহবায়ক মোঃ আল আমিন স্ত্রীর অবর্তমানে একা বাসায় ধর্ষন করে। হঠাৎ বাহির থেকে এসে ধর্ষকের স্ত্রীর দৃশ্যটি দেখে উত্তেজিত হয়ে ধর্ষিতা শিখাকে প্রচন্ড মারপিট করার কারনে ধর্ষিত মেয়েটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য মৃত শিখা রাণীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খাটে শুইয়ে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে এসে তালা খুলে শিখা রাণী আত্মহত্যা করেছে বলে জোড় চিৎকার শুরু করে। বিষযটি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শিখা রাণী চন্দ্রের মাতা আসল ঘটনা জানতে পেরে এলাকাবাসীর কাছে সত্য ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি দাবী করেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষক ও হত্যাকারী গা ঢাকা দেয়।
উল্লেখ্য যে, চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার বোয়ালিয়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্রের সাথে নব কলন গ্রামের মোঃ আল আমিন একসাথে রাজনীতি করত। উভয়ে চাঁদপুর জেলা গন জাগরন মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা। তাদের আদর্শিক মিল থাকার কারনে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। সুভাষ চন্দ্রের মেয়ে শিখা রাণীকে ইতিপূর্বে একটি প্রভাবশালী দলের নেতা কু-প্রস্তাব দেয়। শিখা রাণী তাতে সাড়া না দিলে শিখাকে হত্যার হুমকি দেয় ঐ ছাত্রলীগ নেতা। চরম নিরাপত্তা হীনতায় পড়ে মেয়েটি আশ্রয় নেয় পিতার রাজনৈতিক সহকর্মী মোঃ আল আমিনের বাসায়। আল আমিনের স্ত্রী ফাতেমা নাজনীনও তাকে অভয় দেন এবং সাদরে গ্রহণ করেন। কিছুদিন পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিক মৃত্যু হয় সুভাষ চন্দ্রের। একই বাসায় থাকার কারণে আশ্রিতা যুবতী মেয়ে শিখা রাণী চন্দ্রের উপর কূ-নজর পড়ে মোঃ আল আমিনের। সে শিখাকে ভোগ করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ঘটনার দিন তার স্ত্রী ফাতেমা নাজনীন বিশেষ প্রয়োজনে বাবার বাড়ী গেলে সুযোগ পেয়ে যায় পাষন্ড আল আমিন। সে শিখাকে বাধ্য করে যৌন মিলনে।
এদিকে ধর্ষক আল আমীনের স্ত্রী ফাতেমা নাজনীন সন্ধার দিকে বাড়ি ফিরে তার স্বামী ও শিখাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন। অবৈধ সম্পর্ক ভেবে উত্তেজিত হয়ে শিখা রাণীকে লোহার খন্তি দিয়ে উপর্যপরী আঘাত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার অমানবিক নির্যাতনে মারা যায় শিখা। এলাকাবাসী এসে শিখাকে মৃত ও রক্তাত্ব অবস্থায় দেখে সন্দেহ করেন হত্যা কান্ডের। পুলিশকে খবর দেন প্রতিবেশীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার পূর্বেই পালিয়ে যায় ধর্ষক মোঃ আল আমিন ও হত্যাকারী ফাতেমা নাজনীন। পুলিশ এসে মৃতার সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।
অতপর ধর্ষক ও হত্যাকারী দম্পতিকে আসামী করে মৃতা শিখা চন্দ্র রাণীর মা বাদী হয়ে মতলব থানায় ধর্ষন সহ হত্যা মামলা রুজুর জন্য এজহার দেন। মামলা রুজু করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মতলব থানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের জোর অভিযান অব্যাহত আছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.