উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও সিসিক মেয়রের মধ্যে সৃষ্ট অনাকাংখিত ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

0
1043
blank
blank

সিলেট: গত সোমবার সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মধ্যে সৃষ্ট অনাকাংখিত ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব বক্তব্য প্রদান করেছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেন- বিগত ১১/০৬/১৭ ইং তারিখে সিসিক এর প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান নয়াসড়ক থেকে চৌহাট্রা পর্যন্ত রাস্তা প্রশ্বস্তকরনের স্বার্থে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য কলেজের এমডি বরাবারে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি উইমেন্স মেডিকেল কলেজের নিজস্ব জায়গা থেকে ১৯৫*৬ ফুট জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস্দের মধ্য থেকে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। যে কমিটি সিসিক কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে।
ইতোমধ্যে গত সোমবার হঠাৎ করে দুপুর ১২টার সময় সিসিকের একজন প্রকৌশলী অফিসে এসে দেয়াল ভাঙ্গার কাজ শুরুর অনুমতি চান। তখন প্রতিষ্ঠাতা কোম্পানীর ভাইস চেয়ারম্যান জনাব বশির আহমদ বলেন- এ ব্যাপারে আমাদের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শীঘ্রই তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। অতপর তিনি চলে যান। বেলা ২টার দিকে সিসিকের মেয়র জনাব আরিফুল হক চৌধুরী কোম্পানীর এমডি জনাব ডা. আব্দুল আহাদকে টেলিফোনযোগে কলেজের ভেতরে দেয়ালের ভাঙ্গার কাজ শুরু করতে না দেয়ার কারন জানতে চান। তখন এমডি জনাব আব্দুল আহাদ অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মেয়র মহোদয়কে বলেন- এব্যাপারে আমাদের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আপনাদের সাথে আলোচনা করে করনিয় ঠিক করবেন। তখন মেয়র মহোদয় প্রশ্ন করেন- এই কমিটির সদস্য কারা। তাদের তালিকা আমাকে দেয়া হয়নি কেন? প্রতিউত্তরে এমডি বলেন- এটা আমাদের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে থাকায় আপনাকে জানানো হয়নি। তখন মেয়র মহোদয় ফোন কেটে দেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর তিনি কয়েকজন কাউন্সিলার সহ ১৫/২০ জন লোককে সাথে নিয়ে সরাসরি এমডি মহোদয়ের অফিসে চলে আসেন। মেয়র মহোদয় তখন একটু উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন। এমতাবস্থায় তার সাথে আসা জনৈক কাউন্সিলার কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রতিষ্ঠানের এমডি মহোদয়কে চড়থাপ্পড় মারা শুরু করেন। তখন কোম্পানীর ভাইস চেয়ারম্যান জনাব বশির আহমদ ও পরিচালক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ব্যাপারটি শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং মেয়র মহোদয়কে অপর কক্ষে নিয়ে বসিয়ে কথা বলেন। কথা বার্তার এক পর্যায়ে মেয়র মহোদয়ের সাথে আসা জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ বলে উঠলেন এটার সমাধান এভাবে হবেনা চলেন আমরা চলে যাই। সাথে সাথে উনারা বেরিয়ে যান। কিছু সময় পর দেখা গেলো একটি বুলডোজার কলেজের গেইটে প্রবেশ করছে এবং পার্কিংয়ে থাকা গাড়ী সরানোর জন্য বলা হচ্ছে। তখন কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসলে বুলডোজার বেরিয়ে যায়, তাৎক্ষনিকভাবে উদ্যোক্তা কোম্পানীর একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত পরিচালকবৃন্দ এই ঘটনার একটি সম্মানজনক সমাধানের আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। যদি এমনটি না হয় তবে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ইতোমধ্যে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেয়র মহোদয়ের পক্ষ থেকে দুইজন রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যাক্তি সৃষ্ট ঘটনা নিরসনের প্রস্তাব করেন। মেয়র মহোদয়কে সাথে নিয়ে এসে চিকিৎসাধিন এমডি মহোদয়কে দেখার পরিবেশ সৃষ্টির আহবান জানান। কর্তৃপক্ষ এ প্রস্তাব সাদরে গ্রহন করেন ও মেয়রকে আসার আমন্ত্রন জানান। এর প্রেক্ষিতে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেয়র মহোদয় কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও ৪জন কাউন্সিলারকে সাথে নিয়ে হাসাপাতালে চিকিৎসাধিন আহত এমডিকে দেখতে আসেন এবং তার চিকিৎসার খোজ খবর নেন। সৃষ্ট অনাকাংখিত ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন- আমি মর্মাহত ও অনুতপ্ত। বিভিন্নভাবে আমি চিকিৎসক সমাজের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সহিত লক্ষ্য করলাম যে, এই ঘটনাকে নিয়ে কয়েকটি প্রচার মাধ্যমে মেয়র ও কলেজ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। যার সাথে প্রকৃত ঘটনার কোন মিল নেই।
কর্তৃপক্ষ বলেন- রাস্তা সম্প্রসারণে আমাদের কোন আপত্তি নেই। জায়গা ছাড়তে আমরা প্রস্তুত। তবে তা যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন হবে। সিসিক থেকে আমাদের যে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিটি দেশের বিদ্যমান জমি অধিগ্রহন (ভুমি মন্ত্রনালয়) আইন বিধি মোতাবেক ইস্যু করা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে দেয়াল ভেঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্তের কারনেই এই ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশাবাদী এব্যাপারে আর তেমন সমস্যা হবেনা। মেয়র মহোদয়ের উপস্থিতির কারনে সৃষ্ট অনাকাংখিত ঘটনাটি নিরসনের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। তা শীঘ্রই নিস্পত্তি হবে।
কর্তৃপক্ষ বলেন- সৃষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে যারা কলেজ কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবি সহ সাংবাদিক সমাজ যে সহযোগিতা করেছেন সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।