গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

0
468
blank

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছি। শিক্ষাই হচ্ছে একমাত্র পথ যার মাধ্যমে একটি দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা যায়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে চলমান ৯৮তম ও ৯৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা আমরা বৃদ্ধি করেছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ আছে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল শুরু হয়। একটি দেশে বারবার সামরিক ক্যু হয়। ১৯বার সামরিক ক্যু হয়েছে। সামরিক অফিসার, সৈনিক নির্বিচারে তাদের হত্যা করা হয়েছে। প্রতিরাতেই ছিল কারফিউ। এই হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি আমাদের দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ২০০১-২০০৬ সালের সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিনে ১৩ জন সচিবের চাকরি গেল। সামরিক বাহিনীর অবস্থা তো আরও খারাপ। প্রায় ১ হাজার ২ শ কর্মকর্তাকে সামরিক বাহিনী থেকে বিদায় দিয়ে দিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০০ সালে আমরা এমডিজি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমরা সরকারে আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সক্ষম হয়েছি। এবার লক্ষ্য নিয়েছি এসডিজি। এটাও আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের ওপর আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি দেশকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হলে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে জ্ঞান আপনারা অর্জন করবেন, সেটাই আপনারা কাজে লাগাতে পারবেন দেশ গড়ার ক্ষেত্রে। এ জন্য আমরা প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেই। সে দিকে লক্ষ রেখে সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়ে থাকি। আমরা জানি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, এই প্রশিক্ষণ কোর্স সরকারি দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে। আপনারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, আমরা কী অবস্থায় ছিলাম পাকিস্তান আমলে? তখন আমাদের কোনো অধিকারই ছিল না। বাঙালিরা ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। এই অবহেলিত বাঙালির কথাই জাতির পিতা সব সময় চিন্তা করেছেন। আজ প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারের সব ক্ষেত্রেই, সব জায়গায়ই বাঙালিরাই আছি। এমন দিন ছিল পাকিস্তান আমলে, তখন বাঙালিদের কোনো অবস্থানই ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সামরিক ও বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই বাঙালিরা ছিল সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত। কেন্দ্রীয় সচিবালয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে ৬৯২ জনের মধ্যে বাঙালি অফিসার ছিলেন মাত্র চারজন। সচিব পর্যায়ে কোনো বাঙালিন স্থান পাননি। যুগ্ম সচিব পর্যন্ত মাত্র আটজনের মতো ছিলেন। সামরিক ক্ষেত্রে অবস্থা আরও করুণ। কেবল মেজর পদ পর্যন্ত বাঙালি ছিল, একজন মাত্র কর্নেল পদ পেয়েছিল। বাঙালির কোনো কথা বলার অধিকার ছিল না। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরাট বৈষম্য ছিল। তারা আমাদের অবহেলা করত, মনে করত বাঙালিরা আবার কী করবে? কিন্তু ওরাই এই বাঙালির কাছে পরাজিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধে। আমরা বিজয় অর্জন করি, আমরা বিজয়ী জাতি আজ।