চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিবাদে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে আয়োজিত এলাকাবাসীর সমাবেশে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এতে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন ও ১৪ জন পুলিশসহ কমপক্ষে ৪৫ জন আহত হয়েছেন। বেলা ৩টায় সংর্ঘষ বাধলেও এই উত্তেজনা বেলা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বিরাজ করে।
এদিকে আন্দোলনকারী গন্ডামারার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী দাবি করেন গ্রামের ৯ জন লোক পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। অবশ্য সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো লাশ পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। স্থানীয় ইউপি সদস্যরাও পুলিশ কোনো লাশের তথ্য দিতে পারেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাঁশখালী হাসপাতালে ১৪ জন পুলিশ, ১জন ব্যাটালিয়ন আনসার ও ৪ জন গ্রামবাসী চিকিৎসা নিয়েছেন। তম্মধ্যে ব্যাটালিয়ন আনসার আবদুল মোতালেব (২৬), গ্রামবাসী আব্দুল খালেক, আহমদ ছগির, জহির ও আহমদ ছগির নামের ৪ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ, গ্রামবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবিতে বহুমুখী হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এই হামলার প্রেক্ষিতে এস আলমের পক্ষে মামলা দায়ের করে। গত ৩ এপ্রিল রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গন্ডামারা থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে গন্ডামারার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের ছেড়ে দেয়ার জন্য মুজিব কেল্লা এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এর বিপরীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামশুল আলম মাষ্টার একই স্থানে পাল্টা সমাবেশ ডাক দেন। এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মাইকিং করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সামশুজ্জামান মুজিবকেল্লা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।
বেলা ৩টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাঁশখালী থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৪৪ ধারা জানানোর জন্য গেলে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুই পক্ষে অন্ততঃ অর্ধশতাধিক গুলি বিনিময়। এই গুলির আওয়াজে ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে গন্ডামারা ব্রিজ এলাকায় পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেটরা পিছু হটে। এদিকে এ ঘটনায় চারদিকে গুজব রটে যায় পুলিশের গুলিতে অন্ততঃ ২০ জন মারা গেছে। এর পর পর ঘটনাস্থলে সাতকানিয়া সার্কেল এ এসপি এ কে এম এমরান ভূঁইয়া অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হয়। তিনিও ঘটনাস্থলে আর যেতে পারেননি। সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া পুলিশও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়। গন্ডামারার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী দাবি করেন ঘটনাস্থলে পুলিশে গুলিতে অন্ততঃ ৯ জন মারা গেছেন। তিনি ৫ জনের নাম দিয়েছে এই প্রতিবেদককে। তারা হচ্ছেন জাকের আহমদ (৬০), মর্তুজা আলী (৬০), আনোয়ারা মিয়া(৫২), জহির( ৪০), জাগের (৪০)।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.