চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির দামে অস্বাভাবিক প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে একটি বালিশের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ২৭ হাজার ৭২০ টাকা, যারা সম্ভাব্য বাজার মূল্য ৭৫০ থেকে ২০০০ টাকা। এ রকম অন্তত ১২ টি সরঞ্জাম কেনায় অস্বাভাবিক দাম প্রস্তাব করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। প্রস্তাবটি ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক বলেছেন, ‘আমি তো মাত্র দেশে ফিরেছি। এটা অবশ্যই আমি দেখব। এ ডিপিপিটি সবেমাত্র প্রস্তাব আকারে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো ঠিক করে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা দিবস ২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
বুধবার দৈনিক যুগান্তরে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনাকাটায় তুঘলকি প্রস্তাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এক্ষেত্রে একটি বালিশ কভারের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ২৮ হাজার টাকা। অথচ এর বাজার দাম মাত্র ৫শ' থেকে সাতশ' টাকা। একটি রেক্সিনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। অথচ এর বাজার মূল্য ৩০০-৫০০ টাকা। বালিশ কভার ও রেক্সিন ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্য যেসব সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাব করেছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মাস্কের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। যার সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১০০ থেকে ২০০ টাকা। বালিশের দাম ২৭ হাজার ৭২০ টাকা যারা সম্ভাব্য বাজার মূল্য ৭৫০ থেকে ২০০০ টাকা। এভাবে ১২ ধরনের সরঞ্জামের বাজার দরের সঙ্গে একটি তুলনামূলক ছক তৈরি করে সম্প্রতি প্রস্তাবটি ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের একটি প্রস্তাব প্রায় দুই হাজার পেজের হয়। এতে হাজার হাজার আইটেম থাকে। সেখানে যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, পরিকল্পনা কমিশন এগুলোর বিষয়ে আমাদের বলেছে। এগুলো ঠিক করে দেয়ার ব্যবস্থা করব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ওই ডিপিপি এখনো অনুমোদন হয়নি। তিনি বলেন, ‘এসব ভুল যাচাই-বাছাই করে এটি প্রি-একনেকে অনুমোদন হবে। এরও পর প্রকল্প পাশের জন্য একনেকে উঠবে। এখন প্রি-একনেকেই এটা অনুমোদন হয়নি। যেখানে ভুলভ্রান্তি হয়েছে, সেগুলো অবশ্যই ঠিক করে দেব।’
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে এটি বাস্তবায়ন করার কথা স্বাস্থ্য অধিদফতরের।
প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সেখানেই বিভিন্ন সরঞ্জামের দামে অস্বাভাবিক প্রস্তাবের বিষয়টি চিহ্নিত হয়।
প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ধরনের অসামঞ্জস্য ব্যয় ধরা পড়ায় প্রকল্পটি অনুমোদন প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে বেশকিছু সুপারিশ দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
[যুগান্তর]
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.