জগন্নাথপুরে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

0
491
blank
blank

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুরে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরগরম হয়ে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। দলীয় প্রতীক পেতে স্থানীয় ও হাই কামন্ডে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সেই সাথে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর স্থানীয় জন সাধারণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই নিয়ে কষতে শুরু করেছেন ভোটের হিসাব-নিকাশ। প্রার্থীদের সমর্থকরাও বসে নেই। দেশে-বিদেশে থাকা সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক পাইয়ে দিতে বিভিন্ন ভাবে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত বুধবার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সারা দেশের অন্যান্য উপজেলা পরিষদের সাথে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে জগন্নাথপুরে জমে উঠে নির্বাচনী আমেজ।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ জনসহ মোট ১২ জন প্রার্থীর নাম শোনা গেছে। এর মধ্যে আ.লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আকমল হোসেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, উপজেলা আ.লীগের মানব সম্পদ সম্পাদক মিন্টু রঞ্জন ধর, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু ও যুক্তরাজ্য আ.লীগের সহ-সভাপতি হরমুজ আলী। বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ প্রত্যাশী সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আতাউর রহমান ও জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা আহবায়ক যুক্তরাজ্য প্রবাসী এমএ কাদির এবং জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক প্রত্যাশী জাপা নেতা ডাঃ আছকির খান।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে এস.এ.ও ফাউন্ডেশন ও গ্রীন বার্ড আইডিয়াল স্কুল ঢাকা’র চেয়ারম্যান, সিলেট ক্যামব্রিয়ান কলেজের প্রিন্সিপাল, তরুন শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী অধ্যক্ষ শিব্বির আহমদ ওসমানী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, বিএনপি নেতা জাবেদ আলম কোরেশী। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা প্রত্যাশী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান হাজেরা বারী।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামি রোববার থেকে প্রার্থীরা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আগামি ৯ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ দিন, আগামি ১০ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাই, ১৮ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ও আগামি ৬ মার্চ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। জগন্নাথপুর উপজেলার ভোট সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৩ জন। নতুন তালিকায় ভোটার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, বিগত ২০০৮ সালের শেষের দিকে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান আকমল হোসেনকে হারিয়ে ১৮ ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী আতাউর রহমান মাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। তখন রিটার্নিং অফিসার সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত প্রশাসক এমডি আল আমিন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করলে নিজের পরাজয় মেনে নিয়ে আকমল হোসেন দস্তগত দেন। পরবর্তীতে নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা প্রার্থী মিন্টু রঞ্জন ধর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের আলোকে শুধু শাহারপাড়া নামক ১ কেন্দ্রে আবারো পূণঃনির্বাচনে আলহাজ্ব আকমল হোসেন নির্বাচিত হন। এর মধ্যে কেটে যায় ৩ বছর। দীর্ঘ ৩ বছর পর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান আকমল হোসেন। এর আগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তা। পরে ২০১৪ সালে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ৫ বছর মেয়াদ শেষ হলে আবারো নির্বাচনের তোড়জোর শুরু হয়। এ সময় ৩ বছর পর দায়িত্ব পাওয়া চেয়ারম্যান আকমল হোসেন পুরো ৫ বছর মেয়াদ পেতে উচ্চ আদালতে রিট করলে, রিটের আলোকে তিনি পুরো ৫ বছর মেয়াদের জন্য দায়িত্ব পান। অবশেষে সর্বমোট ৮ বছর পর মেয়াদ শেষ হলে গত বুধবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। এছাড়া বিগত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ হাজার ভোট পেয়ে এমএ কাদির আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এবারের নির্বাচনে তিনি সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু জানান, আজ শুক্রবার আ.লীগের দলীয় প্রার্থী নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করা হবে। পৌর বিএনপির সভাপতি এমএ মতিন জানান, এবারের নির্বাচনে দলীয় একক প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। একক প্রার্থী হলে বিএনপির সহজ বিজয় হবে। সুনামগঞ্জ জেলা জাপা নেতা ডাঃ আছকির খান বলেন, পার্টির প্রতীক পেলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব।