জগন্নাথপুরে নির্বাচনী মাঠে নেই সিদ্দিক-আক্তার

0
485
blank
blank

Pourosoba Electionমো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর: আসন্ন জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে এখনো মাঠে দেখা যায়নি প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সিদ্দিক আহমদ ও আক্তার হোসেনকে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেককে প্রতিনিয়ত মাঠে দেখা যাচ্ছে।

এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, বিএনপি মনোনীত রাজু আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব শাহ নুরুল করিম। নির্বাচনের আর মাত্র ১০ দিন বাকি থাকলেও দলীয় কোন প্রার্থীর পক্ষে জগন্নাথপুরের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদ ও জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান পৌর মেয়র আক্তার হোসেনকে মাঠে দেখা যায়নি।

জানাগেছে, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবক ও এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদ। যাকে সর্বস্তরের জনতা সম্মান করেন। জগন্নাথপুরে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন গ্র“পিং ছিল না। তবে বিগত ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে গ্র“পিংয়ের সৃষ্টি হয়। দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে বর্তমান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফুটবল প্রতীক নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। এ সময় এমএ মান্নানের পক্ষে সিদ্দিক আহমদের নেতৃত্বে একাংশের এবং  আজিজুস সামাদ ডনের পক্ষে আরেক অংশের নেতাকর্মীরা কাজ করেন। এরপর থেকে জগন্নাথপুরে আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা আলাদাভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেন। এর মধ্যে আসন্ন জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মিজানুর রশীদ ভূইয়ার নাম কেন্দ্রে পাঠানো হলেও কাজ হয়নি। সরাসরি কেন্দ্র থেকে সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে  মনোনীত করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে-জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন এলাকার একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। বিএনপির রাজনীতিতে যার ব্যাপক অবদান রয়েছে। যদিও তিনি এবার প্রার্থী হননি। জগন্নাথপুরে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন গ্র“পিং ছিল না। তবে গত বছর বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপিতে গ্র“পিংয়ের সৃষ্টি হয়। একটানা ১৮ বছর জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন আক্তার হোসেন। হঠাৎ করে গত বছর শিক্ষাবিদ লে. কর্ণেল অব. সৈয়দ আলী আহমদকে আহবায়ক করে জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা নিয়ে বিএনপিতে গ্র“পিংয়ের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে একটি আক্তার গ্র“প ও আরেকটি কর্ণেল গ্র“প নামে এলাকায় পরিচিতি পায়। আলাদাভাবে চলে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে আসন্ন জগন্নাথপুর  পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহমদ কর্ণেল গ্র“পের হওয়ায় আক্তার গ্র“পের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।

এ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুল মনাফের পক্ষে সকল ভেদাভেদ ভূলে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক আজিজুস সামাদ ডন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আকমল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদকে দেখা যায়নি।

অপরদিকে- বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহমদের পক্ষে এ পর্যন্ত সকল ভেদাভেদ ভূলে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা, সাবেক এমপি ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী, জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শিক্ষাবিদ লে.কর্ণেল অব. সৈয়দ আলী আহমদসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা গেলেও এখনো জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান পৌর মেয়র আক্তার হোসেনকে দেখা যায়নি। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সিদ্দিক আহমদ ও আক্তার হোসেন মাঠে না থাকায় অবশেষে নির্বাচনের চাকা কোন দিকে ঘুরে এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।