জগন্নাথপুরে বিএনপির গ্রুপিং তুঙ্গে, মানববন্ধন করতে দেয়নি পুলিশ

0
544
blank

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের বিরোধ আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। নতুন কমিটির অনুমোদন নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
দলীয় নেতাকর্মী সূত্রে জানাগেছে, বিগত দুই বছর আগে জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এ সময় একটি আক্তার ও আরেকটি কর্ণেল গ্রুপ নামে এলাকায় পরিচিতি পায়। তারা আলাদাভাবে রাজনৈতিক সকল কর্মসূচি পালন করেন। গত কয়েক মাস আগে কর্ণেল গ্রুপের প্রধান লে.কর্ণেল অব. সৈয়দ আলী আহমদকে মাইনাস দিয়ে কর্ণেল গ্রুপের ছাদ-কবি গ্রুপ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। অবশেষে তারা কর্ণেলকে বাদ দিয়ে আবু হোরায়রা সাদ মাস্টারকে সভাপতি ও কবির আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করেন। এ সময় রাজনৈতিক বেইমানির শিকার হয়ে নিজ ঘর থেকে নিজে বনবাসী হয়ে লে. কর্ণেল অব. সৈয়দ আলী আহমদ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আক্তার গ্রুপে গিয়ে আশ্রয় নেন। তখন আক্তার ও কর্ণেল গ্রুপ এক হয়ে সাদ-কবির গ্রুপের বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলন গড়ে তুলেন এবং দলীয় হাই কমা-ে জোর লবিং চালিয়ে যান। তাদের আশা ছিল জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় আক্তার অথবা কর্ণেলকে সভাপতি পদ দেয়া হবে। তাতে তাদের আশায় গুড়ে বালি। এসব কিছই হলো না। রাজনৈতিক কূট-কৌশলে এগিয়ে যায় সাদ-কবির গ্রুপ। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন সাবেক পৌর মেয়র আক্তার হোসেন। এ সময় আক্তার হোসেনের সুযোগ্য নেতৃত্বে আ.লীগের ঘাটি খ্যাত জগন্নাথপুরে ধীরেধীরে বিএনপি শক্তিশালী হয়ে উঠে। দলে আক্তার হোসেনের ত্যাগের ইতিহাস বিরল। অথচ সেই আক্তার হোসেনকেই অবর্ণনীয় খেশারত দিতে হচ্ছে। এরই নাম রাজনীতি। আরেক নাম বেঈমানী। এভাবেই দলের সিনিয়র নেতাকর্মীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত কয়েক দিন আগে আবু হোরায়রা সাদ মাস্টারকে সভাপতি ও কবির আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আক্তার ও কর্ণেল গ্রুপের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় অনুমোদিত নতুন কমিটিকে প্রত্যাখান করে ঝাড়– মিছিল করেন আক্তার ও কর্ণেল গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তাদের ঝাড়– মিছিলের জবাবে গতকাল রোববার স্থানীয় পৌর পয়েন্টে সাদ-কবির গ্রুপ মানবন্ধনের ডাক দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একই স্থানে একই সময়ে আক্তার-কর্ণেল গ্রুপও মানবন্ধনের ডাক দেয়। একই স্থানে ও একই সময়ে বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপ মানবন্ধনের ডাক দেয়ায় জগন্নাথপুর থানা পুলিশ জন নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ভট পরিস্থিতি মোকাবলায় উভয় গ্রুপকে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। যে কারণে বিএনপির কোন গ্রুপ মানববন্ধর করতে পারেনি। যদিও উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা জানান, পুলিশি বাধায় তাদের কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ওসি হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির কোন গ্রুপই মাঠে আসেনি। তাহলে পুলিশ বাধা দিলো কিভাবে। পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। তবে অনুমতি না নেয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।
জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মারমুখি অবস্থান সম্পর্কে সমাধানে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানতে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আাহবায়ক সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরীর সাথে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় জানা সম্ভব হয়নি।