জগন্নাথপুরে মাছের পর এবার হাঁসে মরক, জনমনে আতঙ্ক

0
493
blank
blank

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: জগন্নাথপুর উপজেলার সকল নদী ও হাওরের পানি দুষিত হয়ে মাছে মরক দেখা দেয়ার পর এবার হাঁসে মরক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানাগেছে, জগন্নাথপুরে এবার বোরো ফসল হানির ঘটনা ঘটেছে। গত প্রায় তিন সপ্তাহ আগে অকাল বন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলার সকল হাওরের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। গত বছর পাকা ধান তলিয়ে গেলেও এবার কাচা থোড় ধান তলিয়ে যায়। এসব ধান পানির নিচে পঁচে গিয়ে পানিকে দুষিত করে দেয়। গত কয়েক দিন আগে উপজেলার সকল নদী ও হাওরের পানি দুষিত হয়ে মাছে মরক দেখা দেয়। যদিও মাছের মরক রোধে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসন পানিতে ওষুধ প্রয়োগ করে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তবে মাছের পর এবার হাঁসে মরক দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, নদী ও হাওরের দুষিত পানি খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাঁসে মরক দেখা দেয়।
জানাযায়, গত মঙ্গলবার জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের খামারি নুসরাত হাঁসের ফার্মের মালিক আবুল কাশেমের প্রায় ৪ হাজার হাঁস মাত্র ২ ঘন্টার ব্যবধানে মরে যায়। এতে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত খামার আবুল কাশেম জানান। এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার আরো বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে হাঁস মরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলাম জানান, দুষিত পানি খেয়ে এসব হাঁস মারা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, খামারি ও সচেতন মহলের লোকজন জানান, প্রথমে গেল ধান, পরে গেল মাছ, এবার মরছে হাঁস। পরে কি হয় সর্বনাশ আল্লাহ ভাল জানেন। তারা আরো বলেন, এবার পরিবারের লোকজনদের নিয়ে কি খাব এবং কিভাবে চলব আমরা বুঝতে পারছি না। একের পর এক ক্ষতি হওয়ার ঘটনায় সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। যদিও জগন্নাথপুরে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রি করছে। তাও পর্যাপ্ত নয়। জগন্নাথপুর পৌর শহরে মাত্র কয়েকটি ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা কেজি দরের সরকারি চাল বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন একটি ডিলার মাত্র ২০০ জনের কাছে চাল বিক্রি করলেও আরো হাজারো লোক অসহায়ের মতো লাইনে দাড়িয়ে থাকেন। অবশেষে অনেকে শূন্য হাতে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। তাই জগন্নাথপুরে দুর্ভিক্ষ রোধে পর্যাপ্ত সরকারি চাল বরাদ্দ দিতে ও মাছ এবং হাঁসের মরক ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান অসহায় পরিবারের লোকজনসহ সর্বস্তরের জনতা।