জগন্নাথপুর পৌরসভার কর্মচারীর বাসার সুবিধার্থে রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণ!

0
503
blank

আলী আছগর ইমন, জগন্নাথপুর: জগন্নাথপুর পৌরসভার এক কর্মচারীর ব্যক্তি বাসার সুবিধার্থে পৌরসভার উদ্যোগে জন সাধারণ চলাচলের রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত প্রায় এক মাস আগে জগন্নাথপুর পৌরসভার উদ্যোগে পৌর শহরের জগন্নাথপুর বাসুদেব বাড়ি গ্রামের একটি জন সাধারণ চলাচলের মালিকানা রাস্তা কেটে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এখানে কাজ শুরু হলে রাস্তার মালিকসহ জন সাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় ড্রেন নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য রাস্তার জায়গার মালিকদের মধ্যে প্রজেশ চন্দ্র দেব জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বর্তমানে ড্রেন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জগন্নাথপুর মৌজার জেএল নং-১২০,সাবেক দাগ নং-৭১ ও ২৬৫ নং খতিয়ানভূক্ত মালিকানা রাস্তার মধ্য স্থানে একটি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। এখানে ড্রেন করতে গিয়ে মাটি কেটে বড় গর্ত তৈরি করার কারণে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, জগন্নাথপুর পৌরসভার কর্মচারী বিপলু রঞ্জন সরকার গ্রামের রতিশ রায় নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় আড়াই শতক জায়গা কেনে নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। এ বাড়ির ৩ দিকে অন্য মালিক ও সামনে রয়েছে জন সাধারণের চলাচলের রাস্তা। তাঁর বাসার পানি নিস্কাশনের ব্যক্তিগত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় তাঁর ব্যক্তি সুবিধার্থে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে পৌরসভার উদ্যোগে মালিকানা রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় জনতার কোন উপকার হবে না বরং ড্রেনের মুখ যে খালে ফেলা হয়েছে, সে খাল ভরাট থাকায় উল্টো খাল থেকে ময়লা-আবর্জনা ড্রেনের গর্তে চলে আসবে। এমতাবস্থায় জেনে-বৃুঝে পৌরসভার একজন কর্মচারীর ব্যক্তি সুবিধার জন্য রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণের ঘটনাটি এলাকায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে রাস্তার জায়গার মালিকদের মধ্যে প্রজেশ চন্দ্র দেব জানান, আমাদের মালিকানা জায়গায় নির্মিত আমাদের চলাচলের রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণ না করতে আমরা লিখিতভাবে আপত্তি করেছি। জানতে চাইলে পৌর প্রকৌশলী সতীশ গোস্বামী জানান, অন্য প্রকল্পের মধ্যে থাকা লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এ ড্রেন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। এখানে জায়গার মালিকদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধ নিস্পত্তি না হলে আমরা এ কাজ অন্য স্থানে করাবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৌরসভার কোন কর্মচারীর ব্যক্তি সুবিধার জন্য নয়, ৭ টি পরিবারের সুবিধার জন্য এ ড্রেন করা হচ্ছে। পৌরসভার স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন মুন্না বলেন, কারো ব্যক্তি সুবিধার জন্য নয়, আমার ওয়ার্ডবাসীর সুবিধার জন্য ড্রেন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ বলেন, এটি আমার আমলের কাজ নয়। বিগত মেয়রের আমলের কাজ এটি। এ ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন মুন্নাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে-পৌরসভার সচেতন নাগরিকদের মধ্যে অনেকে প্রশ্ন রেখে বলেন, লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করলে পৌরসভা ৭০ থেকে ৭শ জন নাগরিকের জন্য সুবিধা করে দিতে পারতো। তা না করে মাত্র ১ থেকে ৭ জন লোকের জন্য তারা এ উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়। তাও আবার বিরোধীয় রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণ?