দাবি না মানা পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান

0
503
blank
blank

সরকারের আশ্বাসে পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ।   সোমবার রাতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের বাইরে সাধারণ আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে এক শিক্ষার্থী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে মাত্র একদিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেন।

ওই শিক্ষার্থীর নামা বিপাশা চৌধুরী।  রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের যে কমিটি ছিল।  তারা আমাদের সাথে পরামর্শ না করেই আন্দোলন স্থগিত করেছেন।  আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না।  আন্দোলন চলবে। আমি অনুরোধ করবো পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে।

তিনি দাবি না মানা পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।  তিনি আরো বলেন, যদি ১৫ এপ্রিলের মধ্যে কোটা সংস্কারের ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না জানানো হয় তাহলে আগামী ১৬ তারিখ চলো চলো ঢাকা চলো কর্মসূচি পালন করা হবে।  দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে চলে আসবে।

বিপাশা বলেন, আমরা নিজেদের এখানে নিরাপদ বোধ করছি না।  কর্মসূচি আজকের মতো শেষ।  আজকে কর্মসূচি স্থগিত।  কাল সকাল ১১টায় ফের রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হবে লাগাতার ধর্মঘট ও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি।

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থগিতের সিদ্ধান্ত মানছেন না সাধারণ আন্দোলনকারীরা। সচিবালয়ে সোমবার বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে আন্দোলন স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয় থেকে পরিষদের ১৯ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসেন। এ সময় সেখানে সাধারণ আন্দোলনকারীরা জড়ো হন।

পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানোর পর ‘ভুয়া মানি না মানব না’ স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ সাধারণ আন্দোলনকারীরা।

এতে পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের সিদ্ধান্ত না মানেন তাহলে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরে যাব। এক মাসে প্রধানমন্ত্রী দুইবার দেশের বাইরে থাকবেন, ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলোচনাটা দেরি হবে বিধায় এক মাস পেছানো হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে দাবি আদায়ে কার্যকরী সিদ্ধান্ত না হলে প্রয়োজনে আগামী ৭ মে ফের আন্দোলন।’

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামী মাসে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ও রোজা।  এই পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে মুলো ঝুলিয়েছে সরকার।  আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না।  অন্তত কোটা সংস্কারের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

এরপর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি মোড়, শাহবাগ মোড়, সব হলের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। রোকেয়া হলের সামনে লাঠি হাতে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাদের থামাতে চেয়েছিল সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে মলচত্বরে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পরিস্থিতি এখনও থমথমে। যে কোনো সময় সংঘর্ষ বাধতে পারে।