দেশ বিক্রি করে কেউ রক্ষা পায়নি: খালেদা জিয়া

0
499
blank
blank

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ এনেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে দেশ বিক্রি করে পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, হাসিনার আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন। আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নে সে এর মধ্যে অনেক কাজ করেছে। এ দেশের সে কিছুই রাখেননি, সবই বিক্রি করেছে। বোধহয় বাকি যেটা আছে, সেটাও বিক্রি করে আসবে। কিন্তু দেশ বিক্রি করেও পৃথিবীর ইতিহাসে ধারণা আছে, কেউ রক্ষা পায় নাই। হাসিনা মনে করে না, যাদের কাছে দেশ বিক্রি করলাম, তিনারা তাকে বাঁচাতে আসবে। তারা বাঁচাতে আসবে না, যখন মানুষ জেগে উঠবে। এ দেশের মানুষ অলরেডি ফুঁসে উঠেছে। এখন দেশের মানুষকে শুধু সময়ের অপেক্ষা করা যে, কখন তারা রাস্তায় বেরুবে এবং এই অন্যায়-জুলুম অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে- এটা সময়ের ব্যাপার।
গত রাতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাত সোয়া ৯টায় চট্টগ্রামে নিহত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুর বিধবা স্ত্রী সুমী আখতার, বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা মীম, দুই ছেলে নাঈমুল আলম ও নুবায়েত আলম পরিবারের সদস্যরা বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাাৎ করতে আসেন। এই উপলে ছাত্রদল আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খালেদা জিয়াকে দেখে নিহতের স্ত্রীসহ সন্তানেরা ডুকরে কাঁদতে থাকেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন তাদের কাছে টেনে সান্ত্বনা দেন। মরহুম নুরুর স্ত্রীর হাতে অনুদানের একটি চেক তুলে দেন খালেদা জিয়া। এ সময় নিহত নুরুর শাশুড়ি জাহানারা বেগম, নুরুর ছোট বোন মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন। নুরুর পরিবারকে দেখাশোনা করার জন্য চট্টগ্রাম বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানান খালেদা জিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ রাতে নুরুল আলম নুরুকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রাকারী সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ওইদিন ভোরে তার লাশ রাউজান উপজেলার কর্ণফুলী নদীর তীরে কৈইয়াপাড়া এলাকায় পাওয়া যায়।
ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন, জেলা যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, নিহত নুরুর মেয়ে উম্মে হাবিবা মীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো: নাছির, রুহুল আলম চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মাহবুবের রহমান শামীম, আনোয়ারুল আজীম, আজিজুল বারী হেলাল, হারুনুর রশীদ, আবদুল আউয়াল খান, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা: ফাওয়াজ হোসেন শুভ, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, আবু সুফিয়ান, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, কাদের গনি চৌধুরীসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের সমালোচনা করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ এবং হাসিনার হাত মানুষের রক্তে রঞ্জিত। হাসিনা প্রতিনিয়ত দেশের মানুষকে খুন করছে, হত্যা করছে। সে ভাবছে, জনগণ হয়তো জানতে পারে না; কিন্তু ওপরে একজন আছেন, তিনি সব দেখছেন, সব জানেন। সময়মতো তিনি ঠিকই বিচার করবেন। শেখ হাসিনার বিচার মানুষ এ দেশের মাটিতে করবে।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, র্যা বের যে ঘটনা বেরিয়েছে, সেটা যদি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন কিভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে? শুধু র্যা ব তো নয়, আরো বহু বাহিনী বানিয়েছে কী কী সব। সব বাহিনী দেশে গড়ছে, যত রাজনৈতিক ভালো ভালো ছেলেপেলে আছে, যারা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে পারবে, দেশের মানুষের সেবা করতে পারবে, কাজ করতে পারবে, সেইসব লোকজনকে বাছাই করে যাতে দেশটা দুর্বল হয়ে থাকে, পঙ্গু হয়ে থাকে। অন্যায় করলে যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে, সেইসব ছেলেপেলেকে বেছে বেছে, মেধাবী শিতি ছেলেপেলেদের র্যা ব খুন করছে, হত্যা করছে। এর পেছনে একটা বড় পরিকল্পনা আছে। কী পরিকল্পনা, হাসিনা আজীবন মতায় থাকার স্বপ্ন।
নুরুর পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নুরুর মেয়েকে আমি সান্ত্বনা দিতে পারব না। কারণ তার মেয়ে বলেছে, আপনারা তো আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। তবে আমি আমার বাবার বিচারটা চাই। আমরা সবাই আশা করব- নুরুসহ আরো অনেকে হত্যা হয়েছে, সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। হত্যাকারীদের যাতে বিচার হয়, শাস্তি হয় এই প্রত্যাশা আমরা করব।