ধর্মের কোনো রাষ্ট্রীয় সীমানা থাকতে পারে না: প্রধান বিচারপতি

0
462
blank
blank

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, আমরা ধর্মকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাই। ধর্মের কোনো রাষ্ট্রীয় সীমানা থাকতে পারে না। ধর্ম সমগ্র মানবতার। মানুষের কল্যাণের জন্য। তাই রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। যারা বিপথে গেছে তাদেরকে বোঝানোর আহ্বান জানিয়ে উপস্থিত সবাইকে যার যার ধর্মের বাণী প্রচার করার কথা বলেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সবুজবাগ বৌদ্ধবিহারে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৌদ্ধ পুর্ণিমা উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সকল মানুষের রক্তই লাল, তাহলে কেন সংঘাত। আজকে কেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়। প্রতিটি ধর্মই শান্তির কথা বলে। তবে আমাদের মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মের অপব্যাখ্যা করছে। যার ফলে পৃথিবীতে এতো সংঘাত হানাহানির ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। আজ বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে আমাদের দুর্গা পূজায়ও ছুটি ঘোষণা করা হয়। আমাদের অনুষ্ঠানে যেমন মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষেরা আসেন, আমরাও তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাই।

প্রধান বিচারপতি সিনহা আরও বলেন, আমরা আজকে ধর্মকে যেভাবে দেখছি, ধর্ম কি আসলে তাই? যেমন কার্ল মার্ক্স দেখেছেন ধর্মকে শাসকের সৃষ্ট হাতিয়ার হিসেবে। আজকে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, পৃথিবীর সব ধর্মের ক্ষেত্রেই একটি সুবিধাবাদী শ্রেণী তাদের নিজেদের মতো করে ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে সুকৌশলে কায়েমী শাসক শ্রেণী লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গভীরভাবে ধর্মগুলোকে নিয়ে চিন্তা করলে আমার মনে হয় এগুলোকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। এগুলো যথাযথ তথ্য নির্ভর নয়, বরং মতবাদ মূলক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা ও অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূহ-উল আলম-লেনিন বলেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এটাই আমাদের রাখী বন্ধন। নাম ও আচারের ভিন্নতা থাকতে পারে। আমাদের রক্ত এক।

নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা বলেন, মানুষকে সঠিক কথা বলে ধরে রাখার ক্ষেত্রে ধর্ম এক বিরাট আধ্যাত্মিক শক্তি। আমরা ভিন্ন নামে ডাকলেও এক ও অভিন্ন স্রষ্টা। সমগ্র মানবজাতি একটি পরিবার। এটাকে ধর্মকে সমৃদ্ধ করেছে।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি শুভ্যানন্দ মহাথের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দজী মহারাজসহ চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের কুটনৈতিক কোরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।