নিজস্ব প্রতিবেদক: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধন বিধিমালার শর্ত পালন করছে কি না তা দেখভাল করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ছিল নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার শেষ দিন। মতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও দশম সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি গত ১৫ কার্যদিবসে নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়নি। প্রতিবেদন জমা দিতে দলগুলোর প থেকে আরো ১৫ দিন থেকে এক মাস সময় চাওয়া হয়।
নির্বাচন বিশ্লেষকেরা বলছেন, কাগজে-কলমে মূল রাজনৈতিক দলের সাথে ছাত্র, পেশাজীবী ও প্রবাসী শাখার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ছাত্রসংগঠনের কমিটি অনুমোদন করছেন দলের প্রধান, প্রবাসী শাখাও বহাল রয়েছে আর শিকসহ পেশাজীবী সংগঠনগুলোও চলছে মূল দলের নির্দেশনায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বড় দলগুলো নিবন্ধন শর্ত মানছে না। তাদের বিরুদ্ধে ইসির কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত। আমি মনে করি যারা শর্ত মানছে না তাদের আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন বাতিল করবে ইসি। অনেক দল ও ছাত্র সংগঠন প্রবাসী শাখা খুলে রেখেছে, যেটা আইনে বৈধ নয়। যত বড় দল হোক নিবন্ধন শর্ত না মানলে তাদের ছাড় দেয়া ঠিক হবে না।
ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) পরিচালক আব্দুল আলীম বলেন, আইন লঙ্ঘন করে ছাত্রসংগঠনগুলো সরাসরি দেখভাল করছে মূল দল। দলীয় প্রধানের অনুমোদন বা অবহিত করেই ছাত্রসংগঠন চলছে। প্রবাসী শাখাগুলো বন্ধ রাখার কথা; কিন্তু বেশির ভাগ দলেই মূল দলের শাখা বহাল রয়েছে। শিক-শ্রমিকদের সংগঠন তো সরাসরি মূল দলের সাথে সম্পৃক্ত। বিশেষ করে পুরনো দলগুলোই এ শর্ত প্রতিপালন নিয়ে বিপাকে থাকবে। নতুন দলগুলো তাদের নির্বাচিত কমিটি, নারী প্রতিনিধিত্ব আর জেলা-উপজেলার কমিটি-অফিস ঠিক রাখতেই ব্যস্ত থাকবে। এখন কমিশন দলগুলোকে শর্ত প্রতিপালন করার জন্য সহায়তা করতে হবে।
ইসি সূত্র জানায়, ২০০৮ সাল থেকে নিবন্ধন চালুর পর এ পর্যন্ত দলগুলোকে আরপিও অনুসরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বড় ধরনের তৎপরতা দেখা যায়নি। এ টি এম শামসুল হুদা ও কাজী রকিব উদ্দিন কমিশন বরাবরই বলে এসেছে, অভিযোগ পেলেই তা খতিয়ে দেখা হবে।
নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল প্রতিবেদন জমা দিতে সময় চেয়েছে। আমরা ১৫ দিন সময় দিয়েছি। ইতোমধ্যে কিছু দল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে; অর্ধেকের বেশি দল জমা দেয়নি। যারা আবেদন করেছে তাদের ফের সময় দেবো; যারা আবেদনই করেনি তাদের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরো বলেন, শর্ত প্রতিপালনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে দলগুলোর সাথে ইসির পারস্পরিক যোগাযোগ আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। সব কিছু এক দিনেই সম্ভব হবে না; সময়ও দিতে হবে। তবে যারা শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হবে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে।
নিবন্ধিত ৪০টি দলের মধ্যে প্রায় অর্ধেক দল নিবন্ধনের শর্ত প্রতিপালন করা হচ্ছে বলে ইসিতে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। দলগুলো হলো- জাকের পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (জেপি), লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), গণফ্রন্ট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও বিকল্পধারা বাংলাদেশসহ ১৮টি দল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.