পরাজয়ের আশঙ্কায় ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনে সন্ত্রাসের রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে: রিজভী

0
446
blank

ঢাকা: চলমান ইউপি নির্বাচনের শেষ ধাপেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।অভিনব কায়দায় বিএনপির প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট ও সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।

ইসি’র কঠোর সমালোচনায় রিজভী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে সব নির্বাচনে কারবালার মাতম উঠেছে। অসংখ্য মানুষের রক্তাক্ত লাশ দেখেও তারা বিচলিত হননি। বরং বারবার স্বাভাবিক ঘটনা বলে সহিংসতাকে সশস্ত্র আওয়ামী ক্যাডারদের পক্ষে উস্কে দিয়েছে। আওয়মী লীগের রক্তাক্ত সন্ত্রাসে একতরফা নির্বাচন চলছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের হৃতগরিমা পুনরুদ্ধার করতে হলে বর্তমান কমিশনকে বিদায় করার কোনো বিকল্প নেই। কারন এই নির্বাচন কমিশনই গণতন্ত্রে নির্বাচন নামক প্রধান শর্তটিকে হত্যা করে কফিনে ঢুকিয়ে শেষ পেরেকটি মেরে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলে কিছু নেই। সবই আওয়ামী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানের কর্তারাই শাসকদলের সুরে কথা বলে।
নির্বাচনী সহিংসতায় হত্যাকান্ডের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে যত হত্যাকান্ড হয়েছে সবেই হয়েছে সরকারের অঙ্গুলীর নির্দেশে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনে সন্ত্রাস করছে। এসবের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি বলেন, এই নির্বাচনে দেখেছি শাসকদলের ক্যাডারদের সন্ত্রাস, পুলিশী সন্ত্রাস, র‌্যাবের সন্ত্রাস, সবমিলিয়ে অভুতপূর্ব নির্বাচনী সন্ত্রাস। আর নির্বাচন কমিশন সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, রিগিং ও পুলিশ একাকার করে দিয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচনী এলাকা যেন এক উন্মুক্ত বধ্যভূমি ছাড়া অন্য কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যায়না। ইউপি নির্বাচনের এই শেষ ধাপে এসে বিএনপির ভবিষ্যৎ বাণীটি অক্ষরে অক্ষরে প্রমানিত হয়েছে। সরকার এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়। একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে হলে জাতিকে ভাবনা চিন্তাহীন, কল্পনাহীন, স্বপ্নহীন, বিচার-বিবেচনাহীন ও নির্বোধ করতে হয়। আর এজন্য একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি তৈরী করতে সরকারী প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ স্থানীয় সরকারে নিজেদের লোক দরকার।
তিনি বলেন, যেহেতু তারা (আওয়ামী লীগ) জনগণ কর্তৃক কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তাই স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে বিজয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাই স্থানীয় সরকারে তাদের একতরফা নিজেদের লোক দরকার, তা না হলে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করা যায়না। ভোটারবিহীন সরকার কর্তৃক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এতো অনাচার, বর্বরতা, জবরদখল, পৈশাচিকতা, রক্তপাত, প্রাণহানি, ডাকাতি, চুরি সহ এক বিভৎস অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের এই সমস্ত সমর্থকরা বিপক্ষ প্রার্থী ও নীরব ভোটারদের রক্ত ঝরিয়েছে। অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত, তাই নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কায় ক্ষমতাসীনরা মারমুখী নীতি অবলম্বন করে সন্ত্রাসের রক্তগংঙ্গা বইয়ে দিয়েছে। কারণ এই নির্বাচন কমিশনই গণতন্ত্রে নির্বাচন নামক প্রধান শর্তটিকে হত্যা করে কফিনে ঢুকিয়ে শেষ পেরেকটি মেরে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, আব্দুল আউয়াল খান, শাহিন শওকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।