পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও অনিয়ম-বর্জনে ভোট শেষ, চলছে গণনা

0
490
blank
blank

ঢাকা: পাল্টাপাল্টি নানারকম অভিযোগ ব্যাপক কারচুপি, জাল ভোট, এজেন্টদের বের করে দেয়া, কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়ম আর ভোট বর্জনের মধ্যে দিয়ে সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় এই ভোটগ্রহণ, বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এর পরপরই গণনা ‍শুরু হয়।

নির্বাচনের কারচুপি, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, প্রভাব বিস্তার ও ভোটদানে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে বরিশাল সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, বাসদ ও সিপিবি’র মেয়র প্রার্থীরা।

সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ওবায়দুর রহমান মাহবুব। এরপর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সরে দাঁড়ান বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার। এর পরপরই জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের মনিষা চক্রবর্তী এবং কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ-সিপিবির প্রার্থী অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ।

বর্জনের ঘোষণার দেয়ার পরপরই এসব প্রার্থীর সমর্থকরা নগরীতে ব্যাপক বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভে এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে নগর জুরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তাদের দাবি, ভোটগ্রহণ শুরুর আধা ঘণ্টা মধ্যেই চরম নৈরাজ্য ও কারচুপি শুরু হয়। গাজীপুর ও খুলনায় ভোটগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হলেও বরিশালে ভোট শুরুই করা হয়নি। ৭০-৮০টি কেন্দ্রে ভোট শুরু না হতেই ব্যালটে নৌকার সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। বিএনপি ও অন্য দলের কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকক্ষে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

সকাল ১০টার দিকে বরিশালের সদর গার্লস কেন্দ্রে হাতেনাতে জাল ভোট ধরায় বাসদের মেয়র প্রার্থী মনিষা চক্রবর্তীর ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা।

সিলেটেও ঘটেছে কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের ঘটনা ঘটনা। এই সিটিতে একাধিক কেন্দ্রে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ফলে দুটি কেন্দ্র ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল (এমএ) মাদরাসা, কাজী জালালউদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ বেশ কিছু কেন্দ্রে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দেড়টার দিকে নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় দুপক্ষের সংঘর্ষে এক ম্যাজিস্ট্রেট আহত হয়েছেন। তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে জানান জেলা প্রশাসক নুমেরি জামান।

সকাল পৌনে ১০টার দিকে কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে একজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

৫নং ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা খাসদবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জালভোট দেয়ার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে আধা ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে। ১২০টি সিল মারা ব্যালট বাক্সে ভরা হয়েছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়।

জাতীয় পার্টির এমপি ইয়াহিয়া চৌধুরী এহিয়া, বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ ভোটারদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রে থেকে বের করে দিয়ে ব্যালেটে সিল দিয়ে বাক্সে ভরে রাখেন বলে অভিযোগ করেন অারিফুল হক।

আর রাজশাহীতে অনেক কেন্দ্রে বুলবুলের এজেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। ধানের শিষের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ করেন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে, বিল সিমলা এলাকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কেন্দ্রসহ অনেক কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীর এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

মেয়র প্রার্থী বুলবুল অভিযোগ করেন- অনেক কেন্দ্রে অস্বাভাবিকভাবে ভোট পড়েছে। আর অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার শেষ হওয়াতে ভোট দিতে পারেননি অনেক ভোটারা।

ভোট শুরুর দুই ঘণ্টা পর নগরীর ইসলামীয়া ভোট কেন্দ্রে মেয়রের ভোটের সঙ্গে কাউন্সিলর প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি। এ জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে ব্যালটের হিসাব চেয়ে ভোটকেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।