পাসপোর্ট ইস্যুতে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের দাবি টিআইবির

0
433
blank

ঢাকা: বাংলাদেশি হিসেবে সকলের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার থাকলেও তা ইস্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নানা ধরনের হয়রানি, দুর্নীতি ও ঘুষ দিতে বাধ্য হন আবেদনকারীরা। বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র বা বায়োমেট্রিক ডাটা ব্যাংক থেকে আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করা সম্ভব। তাই এখন পাসপোর্ট পেতে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল করে ডাটা ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে পাসপোর্ট ইস্যুতে আবেদনপত্র সত্যায়ন ও প্রত্যয়ন বিধানও বাতিল চেয়েছে সংস্থাটি। সোমবার নিজস্ব কার্যালয়ে ‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে এ দাবি জানায় টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে আমরা দেখিয়েছি পুলিশ ভেরিফিকেশনে হয়রানি হচ্ছে। এটার কোনো দরকারই নেই। এর বদলে সকল নাগরিকের জন্য বায়োমেট্রিক ডাটা ব্যাংক এবং অপরাধী তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করে তার সঙ্গে পাসপোর্ট অফিস ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের সংযোগ স্থাপন করার সুপারিশ করেন তিনি।

পাসপোর্ট অফিসের সেবায় ঘুষ বা নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ দেয়ার গড় পরিমাণ ২ হাজার ২২১ টাকা। পাসপোর্ট সেবায় শুধুমাত্র পুলিশি তদন্তে সেবাগ্রহীতারা ৭৬.২ ভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। ৭৫.৩ ভাগ সেবাগ্রহীতাকে ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দিতে হয়েছে। ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ হিসাবে গড়ে ৭৯৭ টাকা দিতে হয়েছে বলে টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। গত ৮ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সেবাগ্রহীতাদের ওপর জরিপ করা হয় এবং সেপ্টেম্বর ২০১৬ থেকে মে ২০১৭ এর মধ্যে গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহনূর রহমান।

তিনি বলেন, পাসপোর্ট করাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হতে হয় পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি), তাদের ছাড়পত্রের জন্য। টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, পুলিশের ওই দফতর অযথা আবেদনপত্রে ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। জঙ্গি কার্যক্রম বা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা বলে ভয় দেখায়। বাড়িতে না গিয়ে চায়ের দোকান বা থানায় ডেকে পাঠায়। ঘুষ দাবি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে।

তবে পাসপোর্ট সেবা জনমুখী ও সহজ করার জন্য সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এসব পদক্ষেপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই টিআইবির সেবা খাতে দুর্নীতি ও জাতীয় খানা জরিপ ২০১৫ শীর্ষক জরিপের সুপারিশমালার সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানায় টিআইবি।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সদস্য এম. হাফিজউদ্দিন খানসহ টিআইবি’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।