পিতার সামনে ধর্ষণ করে যুবতী কন্যাকে হত্যা

0
932
blank

(১৮ আগষ্ট ২০১৭) রোকনোজ্জামান, নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃদ্ধ পিতার সামনে ধর্ষন করে ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম নেতা পারভেজ খন্দকার ও তার সহযােগীরা হত্যা করেছে যুবতী রিপা বেগম (১৬)কে। ধর্ষন করে শেষে নির্মাণাধিন ৩ তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে ধর্ষিতাকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। এতে সে ঘটনা স্থলেই মারা যায়।
পরে বৃদ্ধ পিতাকে চােখ বেঁধে মাইক্রােবাসে করে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে ফেলে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ অক্টােবর মিরপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছেই।
পাশবিক নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের বিষয়ে থানায় অভিযােগ করলে প্রথমে ওসি মামলা করার আগ্রহ দেখালেও ধর্ষণ কারীর পিতৃপরিচয় পেয়ে মামলা রেকর্ড কিংবা লাশ উদ্ধার করে প্রয়ােজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাল বাহানা শুরু করে।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, নেত্রকােনা জেলার কেন্দুয়া থানার ফুলছড়ি গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল মজিদ তার ছােট মেয়ে রিপাকে নিয়ে ঢাকার মিরপুর কলোনিতে স্বামীর সাথে বসবাসরত বড় মেয়ে শিপা বেগমের বাসায় আসার পথে মিরপুর বাসস্ট্যান্ডে মেয়েকে নিয়ে নামেন। শ্যামলী পরিবহনের বাসটি স্ট্যান্ডে পৌঁছতে বিলম্ভ করে। সন্ধ্যা মিলিয়ে যায়। বৃদ্ধ পথ ভুল করে ফেলেন।
এসময় তিনি সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তি পারভেজ খন্দকারকে ঠিকানা লিখা চিরকুট দেখিয়ে গন্তব্য স্থান কতদুর জানতে চান। পারভেজ বলে- একটু দুরেই আছে-চিন্তা করবেন না চাচা, আমি আপনাদের বাসায় পৌঁছে দেবো। এই বলে সে মোবাইল ফােনে কােন একজনের সাথে কথা বলে।
একটু পরে একটি মাইক্রাে নিয়ে লোকজন আসে। পারভেজ বৃদ্ধকে গাড়িতে উঠতে বলে। বৃদ্ধ সরল বিশ্বাসে তার মেয়ে রিপাকে নিয়ে মাইক্রােবাসে চড়েন। একটু পরে গলির ভেতর একটি নির্মানাধিন বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে মাইক্রাে থামে। তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিতা ও কন্যাকে ধর্ষনকারীরা জাের পূবর্ক বিল্ডিংয়ের উপরে উঠায়।
এরপর বৃদ্ধ ও মেয়েকে হাত মুখ বেঁধে রাতভর পিতার সামনে ধর্ষন করে। ধর্ষন শেষে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ধর্ষিতার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে পারভেজ খন্দকার। তারপর তিনতলার ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিলে রিপার মৃত্যু হয়। ভাের হবার আগেই বাসস্ট্যান্ডে বৃদ্ধকে ফেলে চলে যায় পাষন্ডরা।

বৃদ্ধ আব্দুল মজিদ সকালে কেঁদে কেঁদে লোমহর্ষক এই ঘটনার বর্ণনা করলে মানুষের ভিড় জমে যায়। এসময় এগিয়ে যান স্থানীয় সাংবাদিক ইকবাল মাহমুদ। বৃদ্ধের কাছ থেকে এই ঘটনা জেনে প্রতিবেদক ছুটে যান বৃদ্ধকে নিয়ে যে জায়গা থেকে মাইক্রােবাসে উঠেন- সেখানের ছােট চা স্টলের সামনে।
স্থানীয় কিছু ব্যাবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ছাত্র নেতা পারভেজ খন্দকার ও তার সহযােগী শিহাব, শিমূল, কানা হেলাল ও লম্বা আলীসহ বৃদ্ধ ও তার মেয়েকে তার মেয়ে সিপা বেগমের বাসায় পৌঁছে দেবার কথা বলে মাইক্রােবাসে তােলে নিয়ে যেতে দেখেছেন। বৃদ্ধকে প্রতিবেদক মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যান।
ওসি হারুনুর রশিদ ঘটনার কথা শোনে প্রথমে মামলা নিতে আগ্রহ দেখালেও পরে ধর্ষক পারভেজ খন্দকারের পিতা মিল্টন খন্দকারের পরিচয় পেয়ে মামলা রেকর্ডে গড়িমসি শুরু করে।
এনিয়ে প্রতিবেদকের সাথে তীব্র বাক বিতন্ডতা শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রতিবেদক ওসিকে ধর্ষিতার লাশ পােস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানের অনুরোধ করেন। এরমধ্যে থানায় এসে প্রভাবশালী এক নেতা প্রতিবেদককে রিপাের্ট না করার জন্য উৎকােচ সাধেন। তিনি উৎকােচ গ্রহন না করলে তাকে হুমকী প্রদর্শন করা হয়।
প্রতিবেদক থানা থেকে বেরিয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ সুপার বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে দেখবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এ রিপাের্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি কিংবা কােন মামরা দায়ের করার খবর পাওয়া যায়নি।।
এব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য আইন প্রয়ােগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।