পৌর নির্বাচনে কেন্দ্র দখল: ব্যাপক সংঘর্ষ

0
557
blank
blank

নিউজ ডেস্ক: পৌরসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে গতকাল অনুষ্ঠিত ১০টি পৌরসভার মধ্যে অন্তত সাতটিতে কেন্দ্র দখল করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নৌকা প্রতীকে সিল মারা, বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পৌরসভায় ব্যাপক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। কয়েকটি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করে ফের ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, গতকাল জেলার মহেশখালী ও চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক সংঘর্ষ, প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারা, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে প্রার্থী ও এজেন্টসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। মহেশখালীতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে ২৫ জনকে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তির পর ১৯ জনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। মাথায় গুলিবিদ্ধ মুমূর্ষু আবদুশ শুক্কুর (২৫)সহ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহেশখালীর পরিস্থিতি থমথমে। চকরিয়ায় ১৫টি কেন্দ্রে ফের ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দর।
চকরিয়ায় সরেজমিন দেখা যায়, সকালে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা ১১টার পর থেকে পাল্টে যেতে থাকে ১৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ১২টি কেন্দ্রের দৃশ্যপট। বেছে বেছে বের করে দেয়া হয় ধানের শীষ প্রার্থীর এজেন্টদের এবং যারা ছিলেন তাদের নির্দেশ দেয়া হয় তারা যেন কোনো প্রতিবাদ না করেন। প্রাণভয়ে বের হয়ে যান বিএনপি সমর্থক এজেন্টরা। তারপর চলে নৌকা প্রতীকে ইচ্ছে মতো সিল মারা।
সরকারসমর্থক প্রভাবশালী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও একই কৌশল নিতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। বেলা ১১টায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষে লিপ্ত হন সরকারদলীয় কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন প্রার্থী জালাল উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আনোয়ার হোসেন। জালাল উদ্দিন ও জয়নাল আবেদীন অভিযোগ করেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও কাউন্সিলর প্রার্থী জিয়াবুল হক ব্যালটপেপার কেড়ে নিয়ে ইচ্ছে মতো সিল মেরেছেন। প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা করা হয়। অপর দিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিরিঙ্গা সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটপেপার কেড়ে নেয়া নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী মুজিবুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম ফোরকানের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় চিরিঙ্গা মগবাজার সড়ক অবরুদ্ধ করেন বিক্ষুব্ধ ভোটারেরা। পরে পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একইভাবে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুকপুকুরিয়া ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘনশ্যামবাজার এলাকার আর রায়াত একাডেমি কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
চকরিয়ায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দর ১৫টি কেন্দ্রে ফের ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। চকরিয়া লামার চিরিঙ্গায় তার বাসভবনে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চকরিয়া পৌরসভায় ভোটডাকাতির আশঙ্কা সত্য হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাকে গুলি করা হয়েছে এবং তার স্ত্রীসহ অনেক কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। এসব ঘটনার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। রোববার সকাল ১০টার পর বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের লাঞ্ছিত করা হয় এবং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর ভোটারদের ব্যালটপেপার কেড়ে নিয়ে বাক্সে ফেলেছে সরকারদলীয় ক্যাডাররা। সাধারণ ভোটারেরা নিজদের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারেননি। তাৎক্ষণিকভাবে এসব বিষয়ে বার বার অভিযোগ করার পরও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বমূলক ভূমিকার কারণে ১৫টি কেন্দ্রে ভোটডাকাতি করেছে নৌকার লোকজন। তাই আমি পৌরসভার ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ওই ১৫টি কেন্দ্রে ফের ভোটগ্রহণের জন্য জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে দাবি জানিয়েছি। তিনি আরো জানান, হামলায় তার এজেন্টসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ দিকে মহেশখালী পৌরসভার ঘোনারপাড়া কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সরওয়ার আজমের সমর্থকদের সাথে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ ক্যাডারদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সরওয়ার আজমের ১৫ জন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ সাতজনকে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিদ্রোহী প্রার্থী সরওয়ার আজম অভিযোগ করেন, ঘোনারপাড়া কেন্দ্রটি হচ্ছে তার নিজস্ব এলাকার মধ্যে। ওই কেন্দ্রে কক্সবাজার থেকে আগত সরকারদলীয় ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করে। এ সময় তার সমর্থক এবং সাধারণ ভোটাররা বাধা দিলে তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। গুলিতে অর্ধশত লোক আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুলচন্দ্র বণিক জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি করেছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহেশখালীতে সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলে। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী সরওয়ার আজমের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পড়ে। বিকেল ৩টায় কক্সবাজার শহর থেকে স্পিডবোটে জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে দলীয় ক্যাডাররা মহেশখালীতে এসেই একটির পর একটি কেন্দ্র দখল করে তাদের প্রার্থীর পক্ষে সিল মারতে থাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঘোনারপাড়া কেন্দ্র দখল করে সিল মারার সময় প্রার্থী সরওয়ার আজমের সমর্থকরা ও সাধারণ ভোটারেরা বাধা দেন। এ সময় পুলিশ তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে ৩৫ জনেরও বেশি লোক গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে। সংঘর্ষ থামাতে আহত হন মেয়র প্রার্থী সরওয়ার আজম। তিনি সাংবাদিকদের কাছে জানান, তার নিশ্চিত বিজয় ঠেকানোর জন্য মেয়র প্রার্থী মকছুদ মিয়া ক্যাডার ও পুলিশ দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে সিল মেরেছেন।
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠি পৌরসভার কুতুবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সিটি কিন্ডারগার্টেন ভোটকেন্দ্রে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় সিটি কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আফজাল হোসেনের ওপর হামলা করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী লিয়াকত আলী তালুকদারের সমর্থকেরা। হামলায় আফজালসহ পাঁচজন আহত হন। আফজাল হোসেনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেয়র প্রার্থী আফজাল হোসেন ওই কেন্দ্রে এসে পিস্তল বের করেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী লিয়াকত আলী তালুকদারের সমর্থকেরা তার ওপর হামলা চালান। এ সময় আফজালসহ তার চার কর্মীকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি এসে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আধা ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকার পর আবার ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ ও এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
দুপুরে সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন কাউন্সিলর প্রার্থী আলমগীর হোসেনের সমর্থনে ভোট জালিয়াতি করার সময় পুলিশ মিলনের সমর্থকদের লাঠি চার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ দিকে ভোট জালিয়াতিসহ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ দিকে সিটি কিন্ডারগার্টেন সেন্টারে দুপুরে কাউন্সিলর প্রার্থী হক খলিফা ও রফিকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৮-১০ জন আহত হন। একই সময় জেলা পরিষদ সেন্টারে কাউন্সিলর প্রার্থী জামাল হোসেন মিঠু ও ফরিদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন। উভয় স্থানে পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঝালকাঠি পৌর নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। রোববার ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও দলের শহর শাখার সভাপতি অনাদী কুমার দাস সংবাদ সম্মেলনে ফল প্রত্যাখ্যান করেন। তবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী লিয়াকত আলী তালুকদার বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, ব্যাপক জাল ভোট প্রদান, ব্যালট ছিনতাই, সংঘর্ষসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে গতকাল জেলার কবিরহাট পৌরসভার নির্বাচন হয়। এ সময় সংঘর্ষে দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থীসহ ২০ জন আহত হন। কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, হাঙ্গামা ও ব্যালট ছিনতাইয়ের কারণে নির্বাচন কর্মকর্তা দু’টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন। বেলা ১টায় নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জহির উদ্দিন রায়হানের কর্মীরা ৮ নম্বর আলীপুর ঘোষভাগ ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের ভেতর প্রবেশ করে ১০০ ব্যালট ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এতে এ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন নির্বাচন কর্মকর্তা। তার আগে বেলা ১১টায় ইন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাঙ্গামা ও কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালান নৌকার মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা। এ সময় সংঘর্ষে কাউন্সিলর প্রার্থী জিন্নাত আলী ও মোহনসহ ১০ জন আহত হন এবং বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের হামলায় আরো ১০ জন আহত হন। পরে নির্বাচন কর্মকর্তা ইন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন। জাল ভোট দেয়ায় কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এনামুল হক (২৬) নামে একজন ও ৮ নম্বর আলীপুর কেন্দ্রে জহিরুল হক (২৬), রুবেলকে (২০ ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এ দিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু অভিযোগ করে করেন, ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে দ্’ুটি কেন্দ্রের ব্যালট ছিনতাই ও কেন্দ্র দখলের চেষ্টার কারণে ভোট স্থগিত করে দেয়া হয়। কিন্তু অবশিষ্ট সাত কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যাপক জাল ভোট দেন নৌকার কর্মীরা। তিনি আরো বলেন, তার এজেন্টরা জাল ভোট চ্যালেঞ্জ করায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের এজেন্ট দিদারুল আলম মিলন, ২ নম্বর ওয়ার্ডের আ: কুদ্দুস ও আলমগীর, ৫ নম্বর কেন্দ্রের পাভেলকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা পিটিয়ে আহত করেন। তাদের হামলায় ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সেক্রেটারি গোলাম মাওলা, যুবদল নেতা অহিদ উল্লাহ ও নিজাম উদ্দিন আহত হন। এ দিকে কবিরহাটের সাবেক পৌরমেয়র ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জহির উদ্দিন রায়হান বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসেন পরিকল্পিতভাবে দু’টি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ, কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে সিল মারা, বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন স্থানে ৭০-৮০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাঁচজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিপে করে। এ দিকে এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, প্রকাশ্যে ভোট প্রদান, প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর, ককটেল বিস্ফোরণসহ ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শহরে বিােভ মিছিল করেন।
প্রত্যদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ৮টায় পুনিয়াউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দু’জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। পরে ৮-১০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। কেন্দ্রের প্রিজাইঊিং অফিসার মঞ্জুর হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, এ সময় ২৪০০ ব্যালট পেপার দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় দুই ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। বেলা ১০টায় নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোাটকেন্দ্রে ৭-৮টি ককটেল ও দাতিয়ারা মাদরাসা ভোটকেন্দ্রের পাশে ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ভোট গ্রহণ কিছ্ুণ ব্যাহত হয়। কাউতলী লুৎফুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নাছিরউদ্দিন জানান, সকাল ১০টায় এ কেন্দ্রে কমপে আটটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সাময়িক ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়। কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচজন, ৯ নং ওয়ার্ডের একজন ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সরকারি কলেজ কেন্দ্রের পাশে অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। পরে র‌্যাব-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ভোট গ্রহণ আবার শুরু হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, নৌকার সমর্থকেরা প্রকাশ্য সিল মেরেছে এবং নৌকা প্রতীকে সিল মেরে রাখা ব্যালট ভোটারদের দেয়া হয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্র, সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন দখল করে কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়া হয়েছে। এ দিকে সকালে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতি ছিল। দুপুর ১২টার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র ছিল অনেকটা ভোটারশূন্য।
দুপুর ১২টায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এটি প্রহসনের নির্বাচন, এতে জনমত প্রকাশিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনে নজিরবিহীন কারচুপি ও ভোট সন্ত্রাস হয়েছে। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা লাল ফিতা বেঁধে ককটেল হামলা করে বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করেন। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে আগে থেকেই ব্যালট বইয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ছিল। তিনি কয়েকটি ব্যালট দেখিয়ে বলেন, নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্টরা অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত আবেদন করতে চাইলে তা রাখা হয়নি। ৪৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টি কেন্দ্রে নজিরবিহীন কারচুপি হয়েছে। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কোথাও হয়নি। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নৌকা প্রতীকের পক্ষ নিয়ে নানা অনিয়ম করেছে। কারচুুপি ও অনিয়মের অভিযোগ করে তিনি পুনর্নির্বাচন দাবি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহবুব শ্যামল, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার খোকন, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান মন্জু, মো: মমিনুল হকসহ অন্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে কাউতলী শহীদ লুৎফর রহমান স্কুলের ধানের শীষের এজেন্ট অ্যাডভোকেট জেসমিন বলেন, লাল ফিতা বাঁধা নৌকার সমর্থকরো দলবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রে ঢুকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে জোরপূর্বক সিল মেরেছে। পিটিআই স্কুলে ধানের শীষের এজেন্ট সামসুন্নাহার জানান, ভোট শুরুর পর থেকেই প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দেয়া শুরু হয়। বাধা দিলে আমাকে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে কচির বাসভবনের সামনে থেকে তার সমর্থকেরা একটি বিােভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সরকারি কলেজের সামনে আসা মাত্রই কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর পরই কলেজের সামনে অন্তত অর্ধশত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা সরকারি কলেজ ভোটকেন্দ্রেও হামলার চেষ্টা করে। দু’পরে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার হয়। এর ফলে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ সাময়িক বন্ধ থাকে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী ৪৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টি কেন্দ্রে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ করে পুনর্র্নির্বাচন দাবি করেন।
আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী নায়ার কবির সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটারররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন।
ফেনী অফিস জানায়, জেলার সোনাগাজী পৌর নির্বাচনে বহিরাগতদের দাপটে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি ভোটাররা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের সামনেই চলে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের মহোৎসব। সাধারণ ভোটাররা দূরের কথা, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্লাহর স্ত্রী সালমা আক্তার এবং বর্তমান মেয়র ও বিএনপির প্রার্থী জামাল উদ্দিন সেন্টুর স্ত্রী পারভীন আক্তারও ভোট না দিয়ে বরং লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে যান। ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে বহিরাগতদের একতরফা নৌকায় সিল মেরে বাক্স ভর্তির অভিযোগ এনে বিএনপি প্রার্থী জামাল উদ্দিন সেন্টু ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর দিনভর চলে ফাঁকা কেন্দ্রে সিল মারার মহোৎসব।
ভোটগণনা শেষে বিএনপির মেয়র প্রার্থী জামাল উদ্দিন সেন্টুর বাড়ির অদূরে এনায়েত উল্লাহ মহিলা কলেজকেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকে ১১ ভোট ও নৌকা প্রতীকে ১ হাজার ১৪১ ভোট পড়েছে বলে ফল ঘোষণা করা হয়। এ ফল দেখে ভোটের চিত্র বোঝার বাকি থাকে না বলে মন্তব্য পর্যবেকদের।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরাও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর ছাবের পাইলট হাইস্কুলকেন্দ্রে ভোট দিতে যান পাঞ্জাবী প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী জহির উদ্দিন। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগ সমর্থিত বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আবদুল হালিম মামুনের সমর্থকেরা তাকে কেন্দ্রে দেখে বেদম মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে অনুনয়-বিনয় করেও নিজের ভোটই দিতে পারেননি এ প্রার্থী। এ সময় জহিরের সমর্থকেরা এ গিয়ে আসতে চাইলে মুুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণে কেন্দ্র ও আশপাশে আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকেরা।
এ দিকে ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে সকাল ১০টায় বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টু পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
ভোটগ্রহণকালে কর্মকর্তা ও ভোটারদের প্রভাবিতসহ নানা অভিযোগে ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সংরতি সদস্য পদে হারমোনিয়াম প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী সাহানআরা বেগমসহ ১৭ জনের জরিমানা করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামছুল আলম সরকার জানান, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। প্রিজাইডিং অফিসার কোনো অভিযোগ না দিলে আমাদের কী করার আছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্য দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, মেয়র থাকাকালীন জামাল উদ্দিন সেন্টু পৌরসভার কোনো উন্নয়ন না করায় জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ভরাডুবির ভয়ে তিনি আগাম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নাটক করছেন।
নাঙ্গলকোট (কুমিলা) সংবাদদাতা জানান, নাঙ্গলকোট পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার নির্বাচন বর্জন করেছেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারদলীয় প্রার্থী নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটকেন্দ্র দখল, কেন্দ্রে প্রবেশে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি, বহিরাগত লোকজন দ্বারা জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯টি কেন্দ্রে আমাদের কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বাকি দুইটি কেন্দ্রেও এজেন্টদের হুমকি-ধমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে রাতের আঁধারে এবং সকালে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রেখেছে। এ ছাড়া বহিরাগত লোকদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে ভেতরে দলীয় লোকজন প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্টদের থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে নিজেরাই সিল মেরেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে আমাদের বিএনপিদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ও নেতাকর্মীদেরও মারধর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তিনি আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
এ দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ সাইদুল আরীফ বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ পেলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। তিনি দাবি করেন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফরিদপুর অফিস জানায়, জেলার ভাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন চলাকালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে আ’লীগ মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এ এফ এম রেজা ওরফে ফয়েজ মিয়া নয়া দিগন্তকে জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোথাও হট্টগোল হয়নি। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য তিনি পৌরবাসীর সাথে নির্বাচনী কাজে যুক্ত প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। বিএনপি প্রার্থী ওহিদুজ্জামানও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান। আরেক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মুন্সি আবু জাফর বলেন, ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পেরেছেন।
রংপুর অফিস জানায়, জেলার হারাগাছ পৌরসভায় রোববার শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ৭০ ভাগ ভোট পড়তে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সকাল থেকে একসাথে ২০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুপুরে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাবাজার উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার টানাটানি নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী উটপাখি প্রতীকের শাহজাহান ও ডালিম প্রতীকের মাহবুব মিয়ার সমর্থকের মধ্যে বাগি¦তণ্ডা হয়। এ নিয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ, র‌্যাব এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার জিএম শাহতাব উদ্দিন আহমদ নয়া দিগন্তকে জানান, কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোট সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে।
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, জেলার কালীগঞ্জ পৌরসভার ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটাররা ভোট প্রদান করছেন। এখানে ৫ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে আ’লীগ প্রার্থী মো: মকছেদ আলীর নৌকা ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদুর রহমান মন্টুর নারিকেল গাছ, বিএনপি প্রার্থী আতিয়ার রহমান (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আশরাফুজ্জামান লাল (টেলিভিশন), ও ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নুরুল ইসলাম (হাত পাখা) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।