ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ থানাধীন ঐতিহ্যবাহী মোমিন ছড়া চা বাগানের সুন্দরী মহিলা শ্রমিক শিখা রানী দাশকে তার বসতগৃহে ঢুকে জোর পূর্বক ধর্ষন করেছে একই বাগানের টিলাবাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদ। ইতিপূর্বে উক্ত বাগানে আরেকটি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় মোমিন ছড়া চা বাগানে কিছুদিন পূর্বে কিছু পুরুষ ও মহিলা চা বাগান শ্রমিক নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে তালাক প্রাপ্তা অষ্টাদশী মহিলা শ্রমিক শিখা রানী দাশ (১৮) অত্যন্ত সুন্দরী হওয়ায় তার প্রতি কূ-নজর পড়ে বাগানের টিলা বাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদের। বিভিন্ন কৌশলে টিলা বাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদ শিখা রানী দাশকে তার অঞ্চলের বাগানে কাজ করার জন্য রুটিন মাফিক নিযুক্ত করেন।
কাজের ফাঁকে নানা রকম কু-প্রস্তাব তথা শারিরীক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় টিলা বাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদ কিন্তুু শিখা রানী বার বার তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। প্রত্যাখ্যাত হয়ে অনেকটাই বে-পরোয়া হয়ে উঠেন টিলা বাবু তারেক। সব রকম প্রলোভন ও প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে তার পৈশাসিক কামনা চরিতার্থ করতে যে কোন মূল্যে সুন্দরী শিখা রানী দাশের দেহ ভোগের মোহে মত্ত্ব হয়ে উঠেন উক্ত টিলা বাবু।
গত ২২শে ফেব্রুয়ারী-২০১৭ইং সালে কাজ শেষে তার বসত বাড়ীর পৃথক গৃহে রাত ৯টার দিকে ঘুমিয়ে যান তিনি। তার পাশের গৃহে তার পিতা বৃদ্ধ করুনাময় দাশ ও মাতা মনিকা রানী দাশ বসবাস করেন। তারাও একই সময় ঘুমিয়ে পড়েন। রাত অনঃু-১০ ঘটিকার সময় বাগানের টিলা বাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদ তার অনুগত ৫/৬ জন শ্রমিক নিয়ে কৌশলে দরজা খুলে শিখার ঘরে চুপিসারে প্রবেশ করেন।
ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে মুখ, হাত ও পা বেঁধে তার গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে কুখ্যাত তারেক তাকে একাধিক বার ধর্ষন করেন। ধর্ষন শেষে তিনি সঙ্গীদের নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে তার বাংলায় চলে যান। ধর্ষিতা কোন মতে হাত, পা ও মুখের বাধন খুলে চিৎকার দিয়ে তার মা-বাবাকে ডাকেন। তার পিতা মাতা ঘটনা শুনে চিৎকার দিয়ে আশ-পাশের বাগান শ্রমিকদের জড়ো করে ঘটনার বিষয় জানান। বাগানের শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বাগান ম্যানেজারের বাংলোয় গিয়ে বিচার প্রার্থী হন। ঘটনার পরদিন ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হলে ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং সালে শিখা রানী দাশ বাদী হয়ে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা দায়ের করেন। এদিকে ধর্ষক মোহাম্মদ তারেক আহমদ ঘটনার পরই পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বাগান ম্যানেজার জনাব কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, টিলা বাবু মোহাম্মদ তারেক আহমদ নিয়োগ প্রাপ্তির কিছুদিন পর হতেই শ্রমিকদের উস্কানী ও প্ররোচনা দিয়ে বাগানের ক্ষতি সাধনে লিপ্ত ছিলেন। এরই মধ্যে এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জা জনক। আমরা মহিলা শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রদানে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিব। মোহাম্মদ তারেক আহমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। মালিক পক্ষও ঘটনা জেনেছেন। কোম্পানীর আইনমতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলমান। আইনগত ভাবে ধর্ষিতাকে সব রকম সহায়তার ব্যবস্থা আমি নিয়েছি।
পুলিশের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কুমার ধরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনা মতে শিঘ্রই আসামী গ্রেফতার করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। মালিক পক্ষের সাথে যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি। বাগান শ্রমিকরা ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছেন। ঐতিহ্যবাহী মোমিন ছড়া চা বাগানের নিরীহ নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রদানে সব রকম ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক সংঘের নেতারা। নিয়োগ প্রাপ্ত টিলা বাবুর বাড়ী সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানার নওয়াই দক্ষিন ভাগ গ্রামে। তার পিতার নাম সাবুল মিয়া ও মাতার নাম জাছনা বেগম। সে ২০০৯ইং সালে এসএসসি ও ২০১১ইং সালে এইচএসসি পাশ করে গত ফেব্রুয়ারী ২০১৫ইং সালে মোমিন ছড়া চা বাগানে টিলা বাবুর চাকুরীতে নিয়োগ পায় বলে কর্তৃপক্ষের নিকট সংরক্ষিত নথি পর্যবেক্ষনে জানা যায়।
বাগান শ্রমিকদের সুরক্ষায় সব ধরনের বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী বলে জানান ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জিএস আব্দুল মতিন ও সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান। এটিএন বাংলার সিলেট জেলা প্রতিনিধি শাহ মুজিবুর রহমান জকন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, অচিরেই সব বাগান শ্রমিকদের নিয়ে তিনি প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। সচেতন মহল ঘটনার সুষ্ট বিচার দাবী করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.