বরিশাল: বরিশালের বানাড়ীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের দাসেরহাট মজিদবাড়ী লঞ্চ ঘাট এলাকায় লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। ডুবে যাওয়া লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় বানাড়ীপাড়া লঞ্চঘাট থেকে 'এমএল ঐশি' নামের ওই লঞ্চটি ৪০/৫০ জন যাত্রী নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এটি সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন কবলিত দাসেরহাট মজিদবাড়ী ঘাটে ভিড়ে। যাত্রী উঠা-নামার এক পর্যায়ে নদী তীরের একটি বিরাট অংশ ভেঙ্গে লঞ্চের উপর পড়লে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একদিকে কাত হয়ে তীব্র স্রোতের কারণে তলিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তীব্র স্রোতের পাশাপাশি পানির গভীরতা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট ছিল।
ডুবে যাওয়ার আগ মুহুর্তে লঞ্চ থেকে তীরে উঠা যাত্রী উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ নয়াকান্দী গ্রামের বাসিন্দা আলেয়া বেগম জানান, ঘাটে ভেড়ার পর মাত্র ৭/৮ জন যাত্রী তীরে উঠতে পেরেছে। এর পরপরই লঞ্চটি ডুবে যায়।’ ঘটনার পরপরই সেখানে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিআউডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের দেয়া তথ্যানুযায়ী এরা হলেন, বানারীপাড়ার মজিবর রহমানের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৪০), মজিদ মাষ্টারের স্ত্রী সালেহা বেগম (৬০), উজিরপুরের কেশবকাঠী এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আঃ রাজ্জাক (৭৫), বানারীপাড়ার সাঈদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫), মৃতঃ চান্দু মিঞার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪৫), মৃতঃ ইসমাইল মোল্লার ছেলে মুজাম্মেল মোল্লা (৬২), রহিম হাওলাদারের স্ত্রী রেহানা বেগম (৩৫), উজিরপুরের মনিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সুখদেব মল্লিক (৩৫), বানারীপাড়ার আবুল ঘরামীর ছেলে মিলন ঘরামী (৩২), মোঃ সাগর মীর (১৫), উজিরপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল হাওলাদার (৫৫), বানারীপাড়ার আঃ মজিদ’র স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫), উজিরপুরের সিদ্দিকুর রহমানের শিশু মেয়ে শান্তা (৭) এবং স্বরুপকাঠীর কামাল হোসেনের স্ত্রী হিরা বেগম।
ঘটনাস্থলে কর্মরত বিআইডব্লিউটিএ এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী নিখোঁজ রয়েছে লঞ্চের আরো অন্তত ১৩ জন যাত্রী। এরা হলেন- লাশ উদ্ধার হওয়া মিলন ঘরামী’র স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের সন্তান সাফওয়ান (৩), উজিরপুরের খলিল হাওলাদারের স্ত্রী হামিদা বেগম (৪০) ও তার ছেলে নাফফি (৯), লাশ উদ্ধার হওয়া রেহানা বেগমের ছেলে রিয়াদ হাওলাদার (৫), বানারীপাড়ার আঃ মজিদ হাওলাদার (৪৫), হামেদ হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদার (৪০), উজিরপুরের মনিশংকরের স্ত্রী আল্পনা রানী (২৫), বানারীপাড়ার মালেক সরদারের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), উজিরপুরের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রাফি (৭), এবং বানারীপাড়ার আলমগীর হোসেনের শিশু মেয়ে মারিয়া বেগম (৩)।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান জানান, ‘দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জাকির হোসেনকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারিভাবে নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার করে টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। ব্যাপকভাবে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.