বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউরের পদত্যাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা

0
496
blank
blank

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় দেশের স্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা এতথ্য জানিয়েছেন। এর আগে সকালে গুলশানের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গভর্নর বলেন, সোমবার ভারত থেকে দেশে ফেরার পর রাতেই  অর্থমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বলেছেন, আমি চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভালো চলবে। কিন্তু আমি আমার বিবেক দ্বারা চালিত হই। মনে করি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তিনি না বললে আমার পদত্যাগ করা উচিৎ নয়। তিনি বলেন, আমি অপেক্ষা করছি, প্রধানমন্ত্রী কি বলেন। আমি পদত্যাগ করলে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভালো হয়, দেশের ভাল হয়, তাহলে পদত্যাগ করতে আমার দ্বিধা নাই। আমি পদত্যাগপত্র লিখে বসে আছি। প্রধানমন্ত্রী বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি পদত্যাগ করবো। অর্থমন্ত্রীকে না জানানোর যুক্তি তুলে ধরে গভর্নর বলেন, অর্থমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাইনি, কারণ আমি চেষ্টা করছিলাম- টাকাটা ফেরত আনার জন্য। অর্থমন্ত্রীকে জানালে যে টাকাটা ফেরত এসেছে সেটাও ফেরত পেতাম না। কথা বলার একপর্যায়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন আতিউর রহমান। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, যা কিছু করেছি সবই দেশের স্বার্থে করেছি। ২৮ মিলিয়ন ডলার আমার সন্তানের মতো।  প্রতিটি ডলারই তিল তিল করে সঞ্চয় করেছি। একটি ডলারও যাতে নষ্ট না হয় সে চেষ্টা করেছি। কিন্তু এটি ছিল একটা সাইবার অ্যাটাক। কোথা থেকে হ্যাক হয়েছে সে বিষয়ে আমরা কেউই কিছুই জানি না।

তিনি বলেন, এই ঘটনা জানার আমরা কিছুটা গোপনীয়তা অবলম্বন করেছি। আমাদের ইন্টিলিজেন্সকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। র‌্যাবকেও নিয়ে তদন্ত করেছি। তাদের বলেছিÑ আমাদের ব্যাংকের যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে যে কোন সময় গ্রেপ্তার করতে পারেন। পরে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। পুরো টাকাই পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে গভর্নর বলেন, টাকা চুরির পর ফিলিপিনের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। চুরি হওয়ার টাকার একটি অংশ ফেরত পেয়েছি। আজ সকালে ফিলিপিন থেকে সংবাদ এসেছে বাকি টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে। ভারত সফরে যাওয়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েই আমি ভারত সফরে গিয়েছিলাম। এবং সেখানে চুরি যাওয়া অর্থ কিভাবে ফেরত পাওয়া যাবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি।