বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিবে: গয়েশ্বর

0
470
blank
blank

ঢাকা: দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিবে। এখন পর্যন্ত তা চূড়ান্ত করা হয়নি। যদি শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে যেতে হয় তাহলে ৫ বছর পরে কেন? ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেই যাওয়া যেতো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের কোনো সুযোগ নেই বলেও এ সময় মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর।

শনিবার জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শুনুন; সংবিধানের আলোকে পরপর দু’বার নির্বাচনে না গেলে নিবন্ধন বাতিল হয়। কিন্তু এটা আপনারা জানেন যে, সংসদ নির্বাচনে যে প্রতীকগুলো ছিলো, সেই প্রতীকগুলো শুধু সংসদ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু আজকে নৌকা আর ধানের শীষ জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে। আমাদের প্রার্থী তো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যখন এটা স্থানীয় নির্বাচনের জন্য প্রযোজ্য হয়; তখন জাতীয় সংসদের কোয়াসটা (চলে না মর্মে) টিকে না।
খালেদার জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘উনি তো ভারতপ্রেমী। কিন্তু ভারতের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি আছে, তা তো তারা অনুসরণ করেন না। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন ভারতবর্ষের ৬০ বছরের ইতিহাসেও হয়নি। ওই নির্বাচনে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। আগামী নির্বাচনও যদি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো হয়; সে নির্বাচনেও ভোটাররা যাবে না। এ ধরনের নির্বাচন করে তারা যদি টিকে থাকতে চায় টিকে থাকুক। তবে এটা বলতে পারি, খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না।
নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেখে রূপরেখা দিবে- সংবাদ মাধ্যমের এমন খবর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, এখন আমরা এ নিয়ে বসিনি। দলের মধ্যে নানা রঙ, নানা ধরনের ও নানা মতের লোক আছে। কে কি ভাবছে, সেটা আমরা জানি না। পত্রিকার ভাষায় যেটা আসে তা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। আমরা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, তা আদালত নয়, দিয়েছে সরকার। সরকার যখন মামলাটা দিয়েছে- এর পিছনে তো একটা উদ্দেশ্য আছে। এটা তো উদ্দেশ্যবিহীন মামলা না তো। এক-এগারোর সরকারের সময়ে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যতটা মামলা হয়েছিলো, তার চেয়ে দ্বিগুণ মামলা ছিলো আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তিনি প্যারোলে জামিন নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ওই অবস্থায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার পর শেখ হাসিনার মামলাগুলো হাইকোর্ট তাকে দায় মুক্তি বা নিষ্কৃতি দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলাগুলো সচল করে। এ কারণে বলছি, সরকারের একটা উদ্দেশ্য আছে। তাই আমরা বলছি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার একটা উদ্দেশ্য আছে। ওবায়দুল কাদের যা বলছেন তা ধোপে টেকে না। এসব মামলা রাজনৈতিক কারণে। আমাদেরকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এসব করা হচ্ছে। এসব মামলা আমরা আদালতের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, তাঁতীদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।