ঢাকা: অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত নতুন বিধিমালার যে খসড়া আইন মন্ত্রণালয় দিয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ অনুসারে নয় বলে অভিহিত করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেছেন, আইনমন্ত্রী যে খসড়া জমা দিয়েছেন তা আপিল বিভাগের পরামর্শ মতো হয়নি। খসড়ায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত গেজেটের তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলা আছে। অথচ মাসদার হোসেন মামলায় নির্দেশনা আছে, সুপ্রিম কোর্ট যে তারিখ থেকে কার্যকরের পরামর্শ দেবেন, সেই তারিখ থেকে কার্যকর হবে। ‘এটি উল্টো, এভাবে চলতে পারে না।’ এভাবে হলে ১৬ বছরেও হয়নি। ১৬০০ বছরেও গেজেট হবে না।
২৩ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার বিষয়টি আদেশের জন্য কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে ছিল।
দাখিল করা বিধিমালার নতুন খসড়া তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলতে কী বোঝায়, প্রত্যেক আইনে সংজ্ঞায়িত করা আছে। তা আমি আইনমন্ত্রীকে দেখিয়েছি। কর্তৃপক্ষ বলতে বিচার বিভাগের জন্য রাষ্ট্রপতিকে রাখলেন। তাহলে তো আইন মন্ত্রণালয়ই থাকছে। এ বিষয়ে সমাধানে না গেলে চলবে না।
নতুন বিধিমালা পর্যালোচনা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে এ কথা জানিয়ে চলতি সপ্তাহে বেলা দুইটার পরে যেকোনো সময় এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে আলোচনায় বসতে বলেছেন আদালত। আইনমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা এই আলোচনায় থাকতে পারবেন জানিয়ে আদালত আগামী রোববার পরবর্তী আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রোববার আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৩ জুলাই শুনানি শেষে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে রোববার শুনানির নির্দেশ দেন আদালত। পরে ২৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় তার সঙ্গে দেখা করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
ওইদিন তিনি জানান, নিন্ম আদালতের বিচারকদের চাকরি সংক্রান্ত শৃঙ্খলাবিধির খসড়া প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দিয়েছি। এখন ওনি (প্রধান বিচারপতি) সেটা দেখবেন, তারপর নিয়ম অনুযায়ী খসড়াটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। প্রধান বিচারপতির যদি কোন সুপারিশ থাকে তা তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। তিনি এই বিষয়টি দেখবেন এবং সেটার গেজেট চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ করা হবে।
এর আগেও গেজেট প্রকাশে দফায় দফায় সময় নেয় সরকার। ২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। তা না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের ২ সচিবকে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শিব্বির আহমদ ওসমানী [এমএ, এলএলবি (অনার্স), এলএলএম] যোগাযোগ: বনকলাপাড়া রোড, সুবিদবাজার, সিলেট- ৩১০০। ই-মেইল: damarbangla@gmail.com ফোন: ৭১৪২৭১, মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৪৪৫৭৭৯২ www.dailyamarbangla.comCopyright © 2024 Daily Amar Bangla. All rights reserved.