বিত্তবানদের সম্পদের ওপর শিক্ষাকর বসাতে হবে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

0
1530
blank
blank

ঢাকা: শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য বিত্তবানদের সম্পদের ওপর শিক্ষাকর আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও আগামীর ভাবনা নিয়ে ‘এজেন্ডা ২০৩০: শিক্ষার নতুন দিগন্ত’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ পরামর্শ দিয়েছেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে দেশের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবপ্রিয় বলেছেন, শিক্ষাজীবন শেষ করার পর ৪০ শতাংশ বেকার থাকছে। এই ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী কি শিক্ষা পেল, যে তার কোনো কাজ পেল না। বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

তিনি আরো বলেছেন, ‘দেশে শিক্ষাখাতের বরাদ্দ খুবই কম। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপির) মাত্র ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বিত্তবানদের শিক্ষা সম্প্রসারণে জন্য কর দিতে হবে। বিত্তবানদের ওপর শিক্ষাকর আরোপের সুযোগ আছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের ক্রেডিট কার্ডের ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে শিক্ষাকর আরোপ করা যেতে পারে। আবার যারা বিমানে যাতায়াত করেন, তাদের বিমানের টিকিটের ওর শিক্ষাকর আরোপের সুযোগ আছে। সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।’

গণসাক্ষরতা অভিযান এবং এসিডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রচণ্ড চাপে আছি। নানা ধরনের বার্গেনিং (দেনদরবার) আছে। যে রিসোর্স (সম্পদ) আমাদের হাতে আছে এগুলোর ওপর এতো চাপ বিভিন্ন মহল থেকে, সেগুলো যে কোনো রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে মোকাবেলা করা কষ্টকর। নানা ধরনের বিভিন্ন মহল থেকে চাপ থাকে, এগুলো সম্বন্ধে আমি আশা করব, আপনারা বিশেষ করে সিভিল সোসাইটি (সুশীল সমাজ) সোচ্চার হবেন যে ব্যয়টা কোথায় হচ্ছে।’

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চলনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহম প্রমুখ।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে হোসেন জিল্লুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ডিগ্রি কলেজের থেকেই দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে, ৬৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল কোনো ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াই চলছে উল্লেখ করে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী শিক্ষা আইনে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হওয়ার বিধান রাখার দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেছেন, ‘দেবপ্রিয় যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে আমরা যে উন্নয়ন বাজেট করি, কোনো মন্ত্রণালয় এর ৮০-৮১ শতাংশের বেশি খরচ করতে পারে না। কাজেই বাস্তবায়ন ফলপ্রসূ না করে বাজেট বরাদ্দ বাড়ালেই তা কাজে আসবে না।’